মঙ্গলবার থেকেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতিকে জেরা করছে CBI। পোস্টিং দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরে নতুন করে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে।
আরও বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর বিরুদ্ধে ৯৯ পাতার এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলায় মঙ্গলবার থেকেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতিকে জেরা করছে CBI। পোস্টিং দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরে নতুন করে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে।
কী আছে এই ৯৯ পাতার এফআইআর-এ? জানা গিয়েছে ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, তথ্যের কারচুপি, জাল নথিকে আসল বলে চালানোর অভিযোগে এই এফআইআর করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযোগ দায়ের হয়েছে দুর্নীতি দমনের ৭, ৭এ, ৮ ধারাতেও । এফআইআর ( FIR ) -এর মূল কপির সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনামা এবং আবেদনপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশে, ২৫ জুলাই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে একটানা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের চারজন অফিসার। সিবিআইয়ের এসপি কল্যাণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে জেলে গিয়ে মানিককে জেরা করেন দু’টি পৃথক মামলার তদন্তকারী আধিকারিক মলয় দাস, ওয়াসিম আক্রম খান-সহ চার জন। হাই কোর্টের নির্দেশে এই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়।
বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ আবার প্রেসিডেন্সি জেলে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন, কিন্তু এখন তাঁকে সিবিআই নিজের হেফাজতে নেবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘পোস্টিং’ করা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একটি মামলা করেছিলেন সুকান্ত প্রামাণিক। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। প্রাথমিকের নিয়োগে এই দুর্নীতির নেপথ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সক্রিয়ভাবে ছক কষে কাজ করেছেন বলে মনে করেছেন বিচারপতি।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বলা হয়েছিল হোম ডিস্ট্রিক্টে শূন্যপদ নেই, ফলে বাধ্য হয়ে দূরের জেলায় চাকরি গ্রহণ করেন বহু শিক্ষক। ঠিক ১৭ দিন পরে ফের শূন্যপদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় দেখা যায় তাঁদের জেলায় শূন্যপদ আছে। মাত্র ১৭ দিনে কী করে তৈরি হল এই শূন্যপদ? প্রশ্ন বিচারপতির। এভাবে যদি ৪০০ জনের থেকে ১ লক্ষ টাকা করেও নেওয়া হয়, তাহলেও চার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
অসহযোগিতার অভিযোগ এলে আদালত কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি, তদন্তের কাজে ইডি-কেও যুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। জানিয়ে দেন, এই মামলায় কোনও আর্থিক তছরুপ হয়ে থাকলে তদন্ত করতে পারবে ইডি।