আগামী ৪৮ ঘণ্টা অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেমন থাকবেন তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে। অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধের পরে নতুন করে যদি সংক্রমণ না হয় তাহলেই ছাড় পাতে পারেন।
সংক্রমণমুক্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আপাতত চিকিৎসকরা তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া বন্ধ করেছেন। গত শনিবার ফুসফুসে গুরুতর সংক্রমণ ও প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এই শনিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। তবে শেষপর্যন্ত সবকিছু খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রের খবর , আগামী ৪৮ ঘণ্টা অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেমন থাকবেন তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে। অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধের পরে নতুন করে যদি সংক্রমণ না হয় - যদি নতুন কোনও সমস্যা তৈরি না হয় তাহলে সোমবার তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। বাইরের কাউকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কেবিনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
শনিবার উডল্যান্ড হাসপাতালের পক্ষ থেকে জারি করা মে়ডিক্যাল বুলেটিনে বলা হয়েছে, নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এখনও রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। তিনি খাবার গিলতে পারবেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। চলে সোয়ালো অঅ্যাসেসমেন্ট। তবে কবে রাইলস টিউব খোলা হবে তা এখনও ঠিক করা হয়নি। হাসপাতাল সূত্রের খবর খাবার প্রতি রীতিমত অনীগা তৈরি হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
হাসপাতাল সূত্রের খবর বাড়িতে যে বাইপ্যাপটি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্যবহার করেন সেটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সেটি আগামী দিনে তিনি ব্যবহার করবেন। শনিবার দুপুরে বুদ্ধবাবুর চিকিৎসায় নিযুক্ত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা একটি বৈঠক করেছিল। সেখানে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম। সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আগের তুলনায় অনেক ভাল রয়েছেন। চিকিৎসায় ভাল সাড়া দিচ্ছেন। সমস্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও দুই সিপিআই(এম) নেতা জানিয়েছেন। তাঁরা দুজনেই আশা করেছেন খুব তাড়াতাড়ি তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
গত শনিবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে রীতিমত সংকটজনক অবস্থায় গ্রিন করিডোর করে পাম অ্যাভেনিউ থেকে উডল্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় তাঁর রক্তে সংক্রমণের মাত্র ৯০ এর নিচে নেমে গিয়েছিল। শ্বাসকষ্টের প্রবল সমস্যা ছিল। শনিবার রাতেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। রবিবারও ভেন্টিলেশনে ছিলেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সিওপিডি সমস্যা রয়েছে। ২০২১ সালে তিনি করোনাভাইরাসেও আক্রান্ত হয়েছিলষ সেই সময় শারীরিক অবস্থান অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। পাম অ্যাভিনিউর বাড়িতেই থাকতেন। দলের কর্মসূচিতেও সামিল হতে না তিনি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে হাসপাতালে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও একমাত্র সন্তান সুচেতনা। এদিন দলের প্রথম সারিক নেতা বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব হাসপাতালে ছিলেন। সূর্যকান্ত মিশ্র মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথাও বলেন।