
TMC News: বছর ঘুরলেই ছাব্বিশের নির্বাচন। তার আগেই কুচক্রীদের নিয়ে বড় পদক্ষেপ শাসক শিবিরের। এবার 'কুচক্রী'দের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে সার্কুলার জারি করল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়োর মতো মশলাপাতি এবং অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী গিয়ে তাঁদের নাম, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। এই বিষয়ে সতর্ক করতেই সার্কুলার জারি করল তৃণমমূল কংগ্রেস (Tmc News)।
তৃণমূলের সার্কুলারে কী নির্দেশিকা রয়েছে (TMC News):-
এই বিষয়ে তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে বুথ স্তরের কর্মীদের উদ্দেশে এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে কিছু কুচক্রী ভোটারদের বাড়ি যাচ্ছে। তারা কোথাও মশলা, কোথাও আবার অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করে পরিবর্তে তাঁদের নাম, ফোন নম্বর ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে। দলীয় নেতাদের বলা দেওয়া হয়েছে, অঞ্চলের দিকে কড়া নজর রাখুন এবং সর্বস্তরের বুথকর্মীদের নিয়ে মিটিং করে সকলকে সচেতন করুন। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতেও বলা হয়েছে। এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে শাসক দলের তরফে ওই সার্কুলার নোটিসে।
অন্যদিকে, ভোট আসার আগেই ধরা পড়ল ফের ভুয়ো ভোটার। টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ খোদ শাসক দলেরই বিধায়কের। সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের একটি পরিবার এমনই অভিযোগ করেছেন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভোটার কার্ড পাওয়া ওই পরিবারের দাবি, তৃণমূল নাকি ১০ হাজার টাকা নিয়েছিল তারপরই নাম উঠে গিয়েছে ভোটার লিস্টে। যদিও শুধু ওই পরিবার একা নয়, খোদ কাকদ্বীপের বিধায়ক মণ্টুরাম পাখিরাও একই অভিযোগ করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সূত্রের খবর, স্থানীয় বিধায়কের অভিযোগ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের একাংশও এই কাজের পিছনে জড়িত। এদিকে ভুয়ো ভোটার ধরতে বারে বারে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরজন্য একটি টিমও গড়ে দিয়েছেন তিনি। এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যাতে বিষয়টির দিকে নজর দেয় সেই নির্দেশও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee News)। আর এবার এই ইস্যুতে বিস্ফোরক দাবি কাকদ্বীপের বিধায়ক মণ্টুরাম পাখিরার। এই কাজের পিছনে প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের একাংশ জড়িত রয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি বিধায়কের।
বিধায়কের অভিযোগ, কাকদ্বীপের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় অস্বাভাবিক হারে ভোটার বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে রয়েছে এই অসাধু চক্রের হাত। মূলত বাংলাদেশ থেকে চলে আসা মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিনন ধরে এই অঞ্চলে বাস করার ফলে টাকার বিনিময়ে তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম উঠে যাচ্ছে। সূত্রের খবর, প্রায় ৬ হাজার ভোটারের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিধায়ক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শুরু হয়েছে সমীক্ষা। আর সমীক্ষা করতে গিয়েই প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য।
জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপের রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ ও প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা টাকার বিনিময়ে ভোটার লিস্টে নাম তোলার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। এঁরা মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা নাগরিক। এঁদের রেশন কার্ড, আধার কার্ড থাকলেও টাকা দিনে না পারায় অনেকেরই ভোটার লিস্টে নাম নেই। আবার যারা টাকা দিতে পেরেছেন তাঁদের নাম তুলে দেওয়া হয়েছে ভোটার তালিকায়। এরকমই এক বাসিন্দা সুজন সরকার। তিনি বলেন, ''পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর ধরে এখানে আছি। জন্ম সার্টিফিকেট নেই। কিন্তু আধার কার্ড আছে। আমার স্ত্রীর আগেই ভোটার লিস্টে নাম উঠে গিয়েছে। কিন্তু কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও আমার নাম ওঠেনি। পরে পার্টিকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। নাম উঠে গিয়েছে, প্রায় চার-পাঁচ বছর হল।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।