শেখ হাসিনা সরকারের উৎখাতের জন্য যেভাবে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল, সেই আদলেই আরজি কর আন্দোলন চলছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেল। আরজি কর আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অতি বিপ্লবীরা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে হামলার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। রাজ্যের গোয়েন্দারা হামলার আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি ও রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করারও পরামর্শ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা সরকারের উৎখাতের জন্য যেভাবে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল, সেই আদলেই আরজি কর আন্দোলন চলছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পরেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুঙ্কার দিয়েছিলেন, 'এই আন্দোলন সহজে থামবে না।'
গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে খবর কালীঘাটের বাড়ি থেকে নবান্ন যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় ঘিরেও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতেও অতর্কিতে হামলা চালানো হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গোয়েন্দারা। যদিও এ বিষয়ে নবান্নের শীর্ষ মহল থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রীর উপরে হামলা চালাতে সক্ষম হলে সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই এমন অজুহাতে ৩৫৬ ধারা জারির পথ প্রশস্ত হবে। সেই পথ প্রশস্ত করার জন্য প্রতিনিয়তই অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে। আরজি করের নির্যাতিতাকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়া বাহানা। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরানোই মূল লক্ষ্য। তাই সিবিআই তদন্ত ভার হাতে নেওয়ার পরেও রাজ্য সরকারকে নিশানা করে আন্দোলনের নামে অরাজকতা চলছে।'
গত কয়েকদিন ধরে আরজি কর ইস্যুতে 'রাতের দখল' কর্মসূচি সহ যে সব বিক্ষোভ-মিছিল সংগঠিত হয়েছে তার পিছনে সিপিএম-বিজেপি এবং অতি নকশালরা রয়েছে বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণও জোগাড় করেছেন গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, আরজি কর নিয়ে ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ব্যক্তিগতভাবে নিশানা করা হয়েছে। বাদ যাননি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ একাধিক তারকারা।
তৃণমূলের বক্তব্য লোকসভা ভোটে যে সমস্ত পেজ থেকে সিপিএম ও বিজেপির হয়ে যৌথ প্রচার চালানো হয়েছিল, সেই পেজ থেকেই আরজি কর কাণ্ড নিয়ে ভুয়ো প্রচার চলছে। এ বিষয়ে এক হাজারের বেশি প্রোফাইল বা পেজকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে খোলা হয়েছে একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। সন্দেহজনক বেশ কিছু গ্রুপে ঢুকে পড়েছেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ওই সব গ্রুপে কীভাবে রাজ্যে আন্দোলনের নামে অরাজকতা চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এমনকি সোমবার ১৯ অগস্ট রাখি বন্ধনের জন্য মিছিলের নামে বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুর ও পুলিশের উপরে হামলারও পরিকল্পনা কষা হয়েছে বলে খবর।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।