সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুইয়াঁ জানান, নতুন অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের উৎসব বোনাস বাড়তে চলেছে।
এবার কিছুটা সুখবর পেতে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারিরা। ডিএ আন্দোলন ক্রমশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছে। এবার সেই আন্দোলনের আবহেই উৎসব বোনাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে সরকারি কর্মচারীরা উৎসব বোনাস বাবদ ৪৮০০ টাকা করে পেতেন। চলতি বছরে তাঁরা এই খাতে ৫৩০০ টাকা করে পাবেন। আগে যে সব কর্মচারী ৩৭ হাজার টাকা বা তার কম বেতন পেতেন, তাঁরাই এই বোনাস পাওয়ার অধিকারী হতেন। বেতনের এই ঊর্ধ্বসীমা এ বার ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩৯ হাজার টাকা করা হল।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পরে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুইয়াঁ জানান, নতুন অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের উৎসব বোনাস বাড়তে চলেছে। তবে আদৌও কি খুশি ডিএ আন্দোলনকারীরা। ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা তাপস চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “ডিএ আন্দোলনকে ভেস্তে দেওয়ার উদ্দেশে রাজ্য সরকার এই সব করার চেষ্টা করছে। উৎসব বোনাস খুব অল্প সংখ্যক সরকারি কর্মী পেয়ে থাকেন। এই সামান্য টাকায় কিছুই হবে না।” রাজ্য সরকারের নানা পরিকল্পনা সত্ত্বেও ডিএ আন্দোলন যে থামবে না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, উৎসব বোনাস বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে ডিএ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এক দিকে বিক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীদের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া, অপর দিকে ঈদের আগে সংখ্যালঘু কর্মীদের মন জয়ের চেষ্টা করতেই রাজ্য সরকারের এই ঘোষণা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
৩৯ হাজার থেকে ৪৯ হাজার টাকার মধ্যে যাঁরা বেতন পান, তাঁদের উৎসব অগ্রিম বাবদ প্রাপ্য অর্থের পরিমাণও বাড়ানো হল। আগে এই খাতে ১৪ হাজার টাকা পাওয়া যেত। পরিবর্তিত সিদ্ধান্তে ১৬ হাজার টাকা করে পাওয়া যাবে। পেনশনভোগীদের অ্যাড হক ভাতার পরিমাণও বাড়ানো হল। আগে এই বাবদ ২৭০০ টাকা পাওয়া যেত। এ বার থেকে ২৯০০ টাকা পাওয়া যাবে।
বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীদের বড় একটা অংশ। আন্দোলনে রাশ টানতে কর্মবিরতি এবং ধর্মঘটে যোগ দেওয়া কর্মচারীদের শো-কজ় করে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। তবে তার আগে রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।