আরজি কাণ্ডের আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের জনপ্রিয় প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে সত্যিই তাহলে এবার এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে! তবে এরই মাঝে মিলল দারুণ খবর। জেনে নিন।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের এক চালে বিজেপিকে ভোটে মাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। লক্ষ্মীর ভান্ডার ভোটবাক্সে সাফল্য দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে।
বিজেপিকে বাংলায় হোয়াইট ওয়াশ করার পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছে এই প্রকল্প।
আগে এই প্রকল্পের আওতায় প্ৰতি মাসে পাঁচশো টাকা করে ভাতা পেতেন বাংলার মহিলারা। পরে তা বাড়ানো হয়।
ইতিমধ্যেই বর্ধিত ভাতা মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও ঢুকেছে। আগে যেখানে রাজ্যের সাধারণ শ্রেণীর মহিলারা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা পেতেন, সেই জায়গায় এখন তারা প্রতি মাসে পান ১ হাজার টাকা।
অন্যদিকে আগে যে সকল তপশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণীর মহিলারা প্রতিমাসে পেতেন ১ হাজার টাকা, সেই জায়গায় এখন তারা পান ১২০০ টাকা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেবলমাত্র এই লক্ষ্মীর ভান্ডার ভাতার কারণেই গ্রাম বাংলা ঢেলে ভোট দিয়েছে মমতার তৃণমূলকে, এমনটা মত বিরোধীদের একাংশেরও। তবে বর্তমানে আর জি কর আবহে লক্ষীর ভাণ্ডার নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
আগেই বিরোধীরা সওয়াল করেছিল, এবার থেকে মাসে মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নেওয়ার আগে ভেবে নেবেন বাড়ির লক্ষ্মীরা নিরাপদ থাকবে কিনা।
অন্যদিকে শাসকদলের নেতা কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং রাজ্য সরকারের অন্যান্য স্কিমগুলিতে থাকতে চান না, তাদের জন্য ফেরত দেওয়ার একটি ফর্ম দিক রাজ্য সরকার’।
এরপর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়। সত্যিই কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নাকি সেই নিয়ে আশঙ্কা তৈরী হয়েছিল বহু উপভোক্তার মনে।
তবে সেরম কিছুই হয়নি। পুজোর আগে ইতিমধ্যেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকতে শুরু করেছে বাড়ির ‘লক্ষ্মী’দের অ্যাকাউন্টে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প এতদিন যেমন চলছিল তেমনই চলবে।
ফলে এই প্রকল্পের মাধ্যমে যারা প্রত্যেক মাসে সরকারের থেকে ভাতা পান, তাদের কারও ভাতা বন্ধ হচ্ছে না। পুজোর মাসেও একই ভাবে মিলেছে টাকা। মূলত মাসের শুরুর দিকে প্রকল্পের টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যেমন চলছে, তেমনই চলবে। যারা যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন করেছেন, কিন্তু টাকা পাননি, তাদের চিন্তার কিছু নেই। কয়েকটা দিন যাক। পুজোর পরেই সবাই ভাতার টাকা পেয়ে যাবেন। কিছু লক্ষ্মীর ভান্ডার পড়ে রয়েছে। তারা সকলে পুজোর পরে পেয়ে যাবেন। পুজোটা হয়ে যাক আমরা এগুলো রিভিউ করে নেব।’
সেই সময় মমতা আরও বলেন, ‘ডিসেম্বর থেকেই সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন নিয়ে কাজ শুরু করবে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী ও রুপশ্রী প্রকল্পের জন্য আমরা ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বাংলার বাড়ি, বিধবা ভাতা আরও অনেক কিছু দেওয়া হবে ডিসেম্বর থেকে। ইতিমধ্যেই ২ কোটি ১৫ লক্ষ মহিলাকে ৪০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের দেওয়া হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা একাধিক জনহিতকর প্রকল্পের মাঝে নিঃসন্দেহে সব থেকে জনপ্ৰিয় লক্ষীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar Scheme)।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি। সেই মতো নিজ রাজ্যের মহিলাদেরকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে সূচনা হয়েছিল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ এর। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদের আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে।