সায়নী ঘোষের লুক পরিবর্তন, অভিনেত্রী থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে সঙ্গী বড় টিপ আর খোঁপা

অভিনেত্রী রাজনীতিবিদ সায়নী ঘোষ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তৃণমূল কংগ্রেস যুবনেত্রী। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তিনি এখনও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের পাশাপাশি সিবিআইএরও আতশকাচের তলায় রয়েছে। প্রায় উল্কাগতিতে উত্থান সায়নীয়। যাদবপুরের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সায়নী।

১৯৯৩ সালের ২৭ জানুয়ারি জন্ম সায়নীর। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়। বিশেষত তাঁর কথাবার্তার জন্য। অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেক সমালোচক। কিন্তু ঝকঝকে উপস্থাপনা আর বোল্ড লুকের জন্য তিনি আদালাভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকেন। অভিনয়ের থেকেও চর্চায় তাঁর কথাবার্তা, চালচলন আর রগরগে পোশাক।

অভিনয় জীবনের প্রথম দিকে বাম সমর্থক হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরেছিলেন সায়নী। তবে ২০২১ সালের নির্বাচনের আগেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন সায়নী। আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের মত গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রার্থী করেন মমতা। কিন্তু হেরে যান সায়নী। তবে হারেই তাঁর রাজনীতি শেষ হয় যায়নি। হারের পর আরও গুরুদায়িত্ব পান তিনি। তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেত্রী করা হয়।

অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিতে আসার পর সায়নীও নিজেকে ব্যাপক পরিবর্তন করেছেন। কথাবার্তার পাশাপাশি তাঁর পোশাকের পরিবর্তনও চোখে পড়ার মত। সায়নীর এই আমুল পরিবর্তের পিছনেই রয়েছে তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

অভিনেত্রী হিসেবে সায়নী কিন্তু সর্বদাও হট অ্যান্ড বোল্ড। ইচ্ছেডানা সিরিয়ালের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। বড়পর্দায় পা রেখেছিলেন ২০১০ সালে নটবর নট আউটের মাধ্যমে।

রাজচক্রবর্তী শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মত টলিউডের প্রথম সারির পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। হৈচৈ এর মত ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও জনপ্রিয় তিনি।

অভিনেত্রী সায়নীকে তাঁর অনুগামীরা সর্বদা অন্যধরনের লুকেই দেখতে অভ্যস্ত। তবে রাজনীতিতে নেমে তিনি মেকওভার করিয়েছেন বলা যেতেই পারে।

২০২১ সালের নির্বাচনী প্রচারে সায়নী অন্য রূপে ধরা দেন। সেই সময় তাঁকে মূলত শাড়িতেই দেখা গিয়েছিল। কপালে অবশ্য লাল টিপ ছিল। প্রচারের সময় লাল , সাদা , নীল বা সবুজ শাড়িতেই দেখা যেত সায়নীতে।

তবে যুব তৃণমূল নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পরই নিজের লুক বদলে তৎপর হন অভিনেত্রী। ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন সায়নী। সেই সময় থেকেই তাঁকে দেখা যেত টাইট করে বাঁধা খোঁপা আর কপালে বড় লাল বা কালো টিপ পরে।

সায়োলায়র আর সঙ্গে গলা দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া দোপাট্টা বা স্কার্ফই পোকাশ আইকন সায়নীর। অধিকাংশ সময়ই এই পোশাকেই এখন দেখা যায় তাঁকে। তবে পার্টি বা ক্লাবের কথা কিন্তু বলছি না। তৃণমূলের অনুষ্ঠানে তাঁর লুক অনেকটা সাধ্ধী মায়ের মত।

সয়ানীর কপালে বড় লাল বা কালো টিপ। জিন্স বা লেগিসের সঙ্গে সুন্দর কুর্তা। মাথায় চুড়ো করে বাঁধা খোঁপা। চোখ ভর্তি কাজল। বাংলার রাজনীতির ময়দানে নিজের একটা আলাদা আইকন তৈরি করেছেন সায়নী। যেমনটা করতে চেয়েছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও তিনি ততটা সফল নন।

সায়নীকে প্রায়ই একই লুকে হাজিরা দিতে দেখা গেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসে। দীর্ঘ জেরার পর বিধ্বস্ত সায়নীর লুক তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি।