কলকাতার 'ফুটপাত বিক্রি' ঘিরে এই আলোচনা দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি টক টু মেয়রের শো-তে এক মহিলার ফোন ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে শোরগোল।
বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের দামকে হার মানাচ্ছে ফুটপাতের দাম। ভাড়া নিলে রোজ গুনতে হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কিনতে গেলে তো কথাই নেই। দর উঠেছে প্রতি বর্গফুটের প্রায় ৭৮ হাজার টাকা। পাশাপাশি থাকে আইনি আগজপত্রের খরচ। আরও আনুসঙ্গীক মিলিয়ে খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১৫ লক্ষর কাছাকাছি। খাস কলকাতায় ফুটপাত ঘিরে চলছে অবাধ টাকার লেনদেন। জানা যাচ্ছে, কোন বাজার, কোন এলাকা এমনকী ফুটপাতের দৈর্ঘ্য, প্রস্তের উপরও নির্ভর করে এই দাম। কলকাতার 'ফুটপাত বিক্রি' ঘিরে এই আলোচনা দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি টক টু মেয়রের শো-তে এক মহিলার ফোন ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে শোরগোল।
মহিলার অভিযোগ, জায়গা কিনেও বসতে পারেন না কাশীপুরের রতনবাবু রোডের বাসিন্দা মণিকা জানা। 'টক টু মেয়র'এর অনুষ্ঠানে এবার উঠে এল এমনই অভিযোগ। জানা যাচ্ছে ফুটপাতের সাড়ে চার ফুট জায়গা শুধু বেআইনিভাবে দখল করা হয়নি, দেড় লক্ষ টাকার বিনিময় সেই জায়গা আজীবন ভোগ দখলের অধিকার দেওয়া হয় আর একজনকে। কোর্টে পেপারে সই করেই দু'পক্ষের এই আদানপ্রদান। শ্যামবাজার এলাকার একটি ফুটপাত ঘিরে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা। শুধু এই একটি ঘটনা নয় এই সূত্র ধরেই ফুটপা্ত ঘিরে টাকার লেনদেনের এই অজস্র ঘটনা উঠে আসছে। এবার প্রশ্ন তবে কি এবিষয় কিছুই জানত না পুরসভা? মেয়র ফিরহাদ হাকিম গোটা ঘটনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাই জানিয়েছেন।
কাশীপুরের রতনবাবু রোডের বাসিন্দা মণিকা জানা। কয়েক বছর আগে শ্যামবাজারের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের একটি ফুটপাতের দোকান পার্থ দাস নামে এক ব্যক্তির থেকে ভাড়া নেন মণিকা। নিরাপত্তা বাবদ ৩৫ হাজার টাকাও দেন তিনি। পরবর্তীকালে ওই দোকান পার্থ বিক্রি করতে চাওয়ায় দেড় লক্ষ টাকার বিনিময় দোকানটি কেনেন মণিকা। আগে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া ছিল। পরবর্তীকালে আরও ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দেন তিনি। কোর্ট পেপারে সইও করা হয়। গোটা ঘটনার ভিডিও আছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে পরবর্তীকালে পার্থ দাস মারা গেলে তাঁর দাদা ও বাইশ বছরের স্ত্রী দোকানটি মণিকাকে ছেড়ে দিতে বলেন। গোটা ঘটনাটি জানানো হয় স্থানীয় নেতাদের। পরবর্তীকালে থানায়ও অভিযোগ করেন মণিকা। তাতেও কাজ না হওয়ায় এবার সরাসরি মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান তিনি।
ফুটপাত ঘিরে এধরনের অনিয়মের কথা অবশ্য জানতেন না বলেই জানিয়েছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন কমিটি)। গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,'এমন লেনদেন পুরোটাই বেআইনি। আইনি পথে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।' অন্যদিকে পুরসভার মেয়র পারিষদ ও হকার পুনর্বাসন কমিটির সদস্য দেবাশিস কুমার বলেছেন,'দু’পক্ষেরই কড়া শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।' পুরসভার নাকের ডগা দিয়ে কীভাবে এমন অনিয়ম চলছে সেবিষয় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন -
পাহাড়ে হচ্ছে না বনধ, মমতার হুঁশিয়ারির পরই বনধ স্থগিত রাখলেন বিনয় তামাংরা
বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার আরও জোরদার আন্দোলন, আগামী ৯ মার্চ ধর্মঘটের ডাক সরকারি কর্মীদের
রাজ্যে রোগী পরিষেবা নিশ্চিত করতে বড় পদক্ষেপ, এক ধাক্কায় পাঁচ গুণ বাড়ল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বরাদ্দ