রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে ঢুকে বিজেপির বেশ কয়েকজন সদস্য সমর্থক বিক্ষোভ শুরু করেন। আচমকা নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন কয়েকজন বিজেপি কর্মী। নির্বাচন কমিশনের ঘরের দরজাতেও পৌঁছে যান একজন বিজেপি কর্মী।
ছবিটা হয়ত এমনই হওয়ার ছিল। তার আঁচও মিলেছিল গত কয়েকদিনে। রাজ্য জুড়ে হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। একের পর এক রক্তপাত, প্রাণহানি, বন্দুক, গুলি আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভারী বুটের শব্দ ছাপিয়েই শনিবার ৮ই জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চলল। যাবতীয় অভিযোগ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। তাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন। এরই মধ্যে নয়া ঝামেলা নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে।
শনিবার আচমকা নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়েন বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে ঢুকে বিজেপির বেশ কয়েকজন সদস্য সমর্থক বিক্ষোভ শুরু করেন। আচমকা নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন কয়েকজন বিজেপি কর্মী। নির্বাচন কমিশনের ঘরের দরজাতেও পৌঁছে যান একজন বিজেপি কর্মী। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে নির্বাচন কমিশন জুড়ে। ।
এদিকে, বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে বেনজির হিংসা। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত শাসক ও বিরোধী মিলিয়ে ১১ জনের প্রাণ গেল। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত রইল ভোটের দিনও। শনিবার সকাল থেকে বোমা গুলিতে উত্তপ্ত হয়ে ছিল গণতন্ত্রের উৎসবমঞ্চ। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে এপর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মালদা ,মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার -সহ রাজ্যের একাধিক এলাকায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
কোথাও চলছে দেদার ছাপ্পা ভোট, কোথাও ১ ঘণ্টাতেই ভোটগ্রহণ শেষের পরিস্থিতি, কোথাও লুঠ হয়ে গিয়েছে ব্যালট। পঞ্চায়েত ভোটগ্রহণে বেনজির সন্ত্রাস, রক্তপাত আর আতঙ্কে দীর্ণ গ্রামবাংলার জনমত। অশান্তি কিছুতেই থামছে না পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায়। অশান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ৮ জুলাই, নির্বাচন শুরু হওয়ার পরেই রাজভবন থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ইতিমধ্যেই নির্দল প্রার্থীকে মারধর ও অফিস ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়ে গেছে টাকি রোডের ওপর। অশান্তি থামাতে এসে বিফল হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গিয়েছে পুলিশ।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্যপালের কড়া সমালোচনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন বাংলা জ্বলছে পঞ্চায়েত ভোটে - এবার এই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠানো উচিৎ রাজ্যপালের। তিনি যে জেলায় জেলায় ঘুরছেন তাতে কোনও লাভ হবে। তাঁর ভাষণেও কোনও লাভ হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস বুথ দখল করে দেদার ছাপ্পা দিচ্ছে। রাজ্যপালের শান্তির আবেদনে কোনও কান দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দু। শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন আবারও শুভেন্দু অধিকারা রাজ্যে ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা জারি করার দাবি জানান।
আরও পড়ুন
'৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা জারির দাবি', ভোট সন্ত্রাস নিয়ে মমতার পরে রাজ্যপালকে দুষলেন শুভেন্দু অধিকারী