
শনিবার মেসি-কাণ্ডের পরে কেটে গেছে গোটা দুই দিন। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করেই শুধুমাত্র ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট অরূপ বিশ্বাস। তিনি একটি সাদা পাতায় পদত্যাগপত্র লিখে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে। তেমনই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই চিঠি শেয়ার করেছেন করেছেন কুণাল ঘোষ। সেখানে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, 'ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অরূপ বিশ্বাসের ইস্তফা। নেত্রীকে চিঠি লিখে অব্যাহতি চাইলেন তিনি। সূত্রের খবর, সিদ্ধান্ত বিবেচনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।' তবে এই চিঠি নিয়ে ইতিমধ্য়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কেন অরূপ বিশ্বাসের মত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের একজন মন্ত্রী পোড় খাওয়া রাজনীতিবীদ এমন 'সাদা পাতায়' পদত্যাগপত্র লিখলেন। কারণ মন্ত্রী স্থানীয় কেউ যদি পদত্যাগ করেন তাহলে অবশ্যই তাঁকে নিজের বা মন্ত্রীর লেটারহেডে পদত্যাগ পত্র লিখতে হবে। এভাবে সাদা পাতায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানো যায় কিনা তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
কুণাল ঘোষ যে পদত্যাগপত্রের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সেই ছবিতে কোথাও অরূপ বিশ্বাসের নাম নেই। এমনকি চিঠির শেষে অরূপ বিশ্বাসের সইও দেখা যাচ্ছে না। কুণাল ঘোষ যদি না সোশ্যাল মিডিয়ায় জানালেন চিঠিটি অরূপ বিশ্বাসের তাহলে অনেকেরই বুঝতে সমস্যা হত। কারণ গোটা চিঠির একজায়গায় মাত্র লেখা রয়েছে, 'তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আমি ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে আপনার কাছে অব্যাহতি চাইছি।' এছাড়া আর কোথাও ক্রীড়ামন্ত্রী বা অরূপ বিশ্বাস- এর উল্লেখ দেখা যায়নি।
নেটিজেনদের তৃতীয় প্রশ্ন হল ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে যদি ব্যক্তিগত বা অফিশিয়াল লেটারহেড নাও থাকে তাহলে তিনি এই ডিজিটাল যুগে মেল করে কেন পদত্যাগ করলেন না? এখন ইমেল করে পদত্যাগ পাঠানো অনেকক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য।
অরূপ বিশ্বাস রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্য়াণ দফতরের পাশাপাশি রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীও। বিদ্যুৎমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি চাননি। অরূপের সাদা পাতায় পদত্যাগ পত্র পাঠানোর পরই রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরের সংশ্লিষ্ট সচিবদের তলব করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি।
তবে কুণাল ঘোষের শেয়ার করা অরূপ বিশ্বাসের পদত্যাগ পত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এটি কুণাল শোযার করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ১.৭ হাজার মানুষ দেখেছেন। অনেকেই শেয়ার করেছেন। অনেকেই আবার মন্তব্য করেছেন। কেউ যুবভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনের ঘটনায় দায় নিয়ে পদত্যাগ করার জন্য অরূপ বিশ্বাসকে স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও অধিকাংশই সমালোচনায় সরব হয়েছে। অনেকেই অরূপ বিশ্বাসের হাতের লেখার সমালোচনা করেছেন। অনেকে অবার সাদা পাতায় পদত্যাগপত্র লেখার তুলোধনা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে। অনেকে অবার বলেছেন, রাজ্যের মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য এই কারসাজি। কেউ আবার বলেছেন, অভিষেক আর আইপ্যাকের চাপে বাধ্য হয়েই অরূপ পদত্যাগ করেছেন। যদিও অরূপ বিশ্বাস এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।