
Mamata Banerjee News: রাজ্যে সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখার প্রভাবে চলছে দফায় দফায় বৃষ্টি। আগামী কয়েক দিনে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আর এরই মধ্যে এবার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরও বেশি সতর্ক হতে জেলা শাসকদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন থেকে ভার্চুয়াল বৈঠক করছিলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। সেই সময় মুখ্য সচিবকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেলিফোনেই মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধে না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মুখ্য সচিবের নির্দেশে বিশেষ সরকারি দল বিভিন্ন জেলায় গিয়েছে। তাদের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অতি বৃষ্টির ফলে বেশ কিছু জায়গায় প্লাবন হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, প্লাবিত অঞ্চলে সরকারি সাহায্য যাতে ঠিকমত পৌঁছয় সেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের জেরে নামখানার মৌসুনি দ্বীপের নদী বাঁধে বড়সড় ধ্বস। আতঙ্কিত এলাকা বাসী। বৃহস্পতিবার সকালে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়াড়াতে বড়তলা নদী বাঁধে বড়সড় ধ্বস দেখা যায়। প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী বাঁধে ধ্বস।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু তাসত্ত্বেও আতঙ্ক কাটছে না গ্রামবাসীদের। কারণ সামনেই রয়েছে অমাবস্যার কোটাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙেছে। প্রায় ৫০ ফুটের মতো নদী বাঁধের মাটি কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, নদী বাঁধে কাজ করার নামে জিও চট তুলে নেওয়ার জন্য কার্যত বাঁধের মাটি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকায় পাকাপোক্ত স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
এদিকে টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত গোঘাট! সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, মাথায় হাত কৃষকদের। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি পূর্ব মেদিনীপুর থেকে শুরু করে হুগলি পর্যন্ত। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী সাত দিনের নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়েছে, আজ তার তৃতীয় দিন। আর এই টানা বর্ষণের সরাসরি প্রভাব পড়েছে হুগলির গোঘাট ২ নম্বর ব্লকের পশ্চিম পাড়া অঞ্চলে।
রঙ্গবতী ও তারাজুলি খালের সংযোগস্থলে থাকা সেতুটি ইতিমধ্যেই বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছেছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই সেতুটি ভেঙে পড়ার পর তড়িঘড়ি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও ফের তা পারাপারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর নড়বড়ে কাঠামো এবং নিম্নমানের সংস্কার কাজের ফলেই এই বিপর্যয়।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বহু গ্রামীণ রাস্তা ও সেতু ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত অচল। সবচেয়ে বড় বিপদের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। জমিতে জল জমে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তিল ও ধান চাষে। স্থানীয় চাষিদের বক্তব্য, "এখনও তিল কাটা হয়নি, আর যে কটা কেটেছি তা ভেসে যাচ্ছে জলের তোড়ে!"
শুধু তাই নয়, যাঁরা সবজি চাষ করেছিলেন, তাঁদেরও ক্ষতি কম নয়। ইতিমধ্যেই পচে যেতে শুরু করেছে ক্ষেতের সবজি।চাষবাসের এমন ভয়াবহ ক্ষতিতে কৃষকদের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। একদিকে ফসলহানি, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত যাতায়াত ব্যবস্থা — সব মিলিয়ে গোঘাটে এক গভীর সংকট তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করছেন গ্রামবাসীরা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।