উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে যে দুই জেলায় বার বার হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার একটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা। অন্যটি কোচবিহার। সেই সকল হিংসা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন রাজ্যপাল।
সরাসরি এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে মুখ খুলল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সহ সভাপতি সুব্রত বক্সি নির্বাচন কমিশনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছেন। সেখানে তাঁর দাবি পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে যে আদর্শ আচরণবিধি জারি রয়েছে, তা লঙ্ঘন করেছেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর মনোনয়ন জমার দিন থেকেই বিভিন্ন হিংসার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। প্রাণ হারিয়েছেন শাসক, বিরোধী দুই পক্ষেরই লোকজন। উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে যে দুই জেলায় বার বার হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার একটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা। অন্যটি কোচবিহার। সেই সকল হিংসা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের এই পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চিঠিতে মূলত চারটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছে তৃণমূল। নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে অযাচিত মন্তব্য এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। অন্যদিকে হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে সরকারি বাসভবন, সার্কিট হাউসে থেকে তিনি বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
তৃতীয়ত রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি সদস্যদের জন্য আলাদা করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। চতুর্থত, কমিশনের পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে অনধিকার চর্চা করছেন তিনি। স্থানীয় বিডিওর সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করছেন।
এই কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের প্রশ্ন রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর কাছ থেকে নিরপেক্ষতা আশা করা যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ছবিটা অন্য। উল্লেখ্য, প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হিংসা কবলিত ভাঙড়, ক্যানিং পরিদর্শন করেছেন। রাজভবনে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে খুলেছেন ‘শান্তিকক্ষ’। তার পর গত শনিবার কোচবিহার ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। সোমবার সকালেই কোচবিহার থেকে ফিরে সড়কপথে বাসন্তীর গাগরামারি গ্রামে পৌঁছন। সেখানে তিনি কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। বার্তা দিয়েছেন, মানুষের রক্ত দিয়ে ‘রাজনৈতিক হোলি’ খেলা বন্ধ করতে হবে।
এই ঘটনাগুলিকেই নিশানা করেছেন তৃণমূল। 'সরকার-কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল। রাজ্যে সমান্তরাল সরকার পরিচালনার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল।', রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের।