আসলে তৃণমূলের ভয়ে নাকি প্রচারেই বেরোতে পারছিলেন না কামারহাটি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী আসলাম আলি। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। সেই কারণে প্রচার না করে বাড়িতেই তাঁর দিন কাটছিল।
পুরভোটের (West Bengal Municipal Election 2022) দামামা অনেক দিন আগেই বেজে গিয়েছে রাজ্যে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই অভিনব প্রচারে মেতে উঠেছে শাসক থেকে বিরোধী সব শিবিরই। জোরকদমে চলছে প্রচার (Vote Campaign)। আর আজ প্রচারের সময়তেই কামারহাটিতে সিপিআইএম প্রার্থীর (CPIM Candidate) বাড়িতে হঠাৎই হাজির হন তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) মদন মিত্র (Madan Mitra)। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী বাড়ির দরজা খুলতেই তাঁর ঘরের ভিতরে চলে যান তিনি। এরপর ড্রয়িং রুমে বসে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন প্রার্থীর সঙ্গে। পুরভোটের ঠিক এক সপ্তাহ আগে রাজনীতির এক নতুন সমীকরণ কামারহাটিতে (Kamarhati)।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আসলে তৃণমূলের (TMC) ভয়ে নাকি প্রচারেই বেরোতে পারছিলেন না কামারহাটি পুরসভার (Kamarjati Municipality) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী আসলাম আলি (Aslam Ali)। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। সেই কারণে প্রচার না করে বাড়িতেই তাঁর দিন কাটছিল। তাঁর অভিযোগ, ভোটে প্রচারে বেরোলেই তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে ভয় দেখাচ্ছে। প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকী, তাঁর পোস্টার ও ব্যানারও ছিঁড়ে দিচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা। প্রতিবাদ করলেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই নিজের প্রাণের ভয় প্রচার তো দূরের কথা দু'দিন ধরে বাড়ি থেকেই তিনি আর বের হচ্ছেন না। গৃহবন্দী হয়েই কাটছে তাঁর দিন। এখন এই পরিস্থিতির মধ্যে ভোটের দিন কীভাবে ভোট হয় তা নিয়েই রীতিমতো চিন্তিত রয়েছেন তিনি।
আর এই খবর জানতে পারার পরই সোজা আসলাম আলির বাড়িতে গিয়ে হাজির হন মদন মিত্র। তাঁকে নির্ভয়ে প্রচারে বের হওয়ার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি কোনওভাবেই তাঁকে আর হুমকির মুখে পড়তে হবে না বলেও আশ্বাস দেন। তাঁকে আশ্বাস দেন, "নিশ্চিন্তে প্রচার করুন, মদন মিত্র সঙ্গে আছে।"
মদন মিত্রর বক্তব্য
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, "আমি থানা থেকে শুনলাম। এলাকায় আমায় দুজন সিপিএমের ছেলে বলল।" এরপর সিপিআইএম প্রার্থীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনি পোস্টার দিন, কেউ যদি কিছু করে, আর সে যদি তৃণমূলের ছেলে হয়, তাহলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব। কিন্তু, আমরা অযথা বদনাম নিতে চাই না। কামারহাটিতে লুঠ করার কোনও প্রয়োজনই হবে না। সারা বাংলায় লুঠের প্রয়োজন নেই।"
সিপিআইএম প্রার্থী আসলাম আলি বলেন, "আমি বাজার করতে বের হতে পারছি না। প্রচারে বের হতে পারছি না। পিছন থেকে আওয়াজ দিচ্ছে। তাই আমি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছিলাম। বেলঘরিয়ার আইসিকে জানিয়েছিলাম। তাঁরা এক সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন। যদি কিছু না করে, তাহলে আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে বলতে বাধ্য হব। কিন্তু, এই কথা শোনার পর যে নেতা নিজেই আমার বাড়িতে চলে আসবেন তা ভাবতেই পারিনি। তবে তাঁর আশ্বাসে আমি সন্তুষ্ট।" তবে ভোটের আগের এই রাজনৈতিক সৌজন্যতা ভোটের দিন কতটা ফলপ্রসূ হয় এখন সেটাই দেখার।