তাঁর ভাইকে ডাকা হয়েছে। এবার তাঁকেও জেরা করতে ডাকতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারি তদন্তকারী কোনও সংস্থা। কিন্তু সেরকম হলে তিনি জেরার মুখোমুখি হতে তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলনেত্রী। ইতিমধ্যেই পি চিদম্বরমের মতো নেতাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলনেত্রীর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কর্ণাটকের উদাহরণ টেনে মমতা এ দিন অভিযোগ করেন, সব রাজনৈতিক দলকেই হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভয় দেখিয়ে নয়তো টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছে বিজেপি। কর্ণাটকেও ঘোড়া কেনাবেচা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, 'এখন বলছে বাংলা দখল করবে। কীভাবে করবে জানি না। আমরা এজেন্সিকে ভয় পাই না। আজকে আমার ভাইকে ডাকছে, কাল আমায় ডাকবে। আমি জেলে যেতে তৈরি। কিন্তু বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কাছে মাথা নত করব না। জেলে গেলে ভাবব আমি স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াই করছি।' তৃণমূল-সহ বাংলার মোট একশো সাতজন বিধায়ক বিজেপি-তে যাবেন বলে যে দাবি করছে গেরুয়া শিবির, তাকেও এ দিন কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনের সভা থেকে মমতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। এমন কী নির্বাচন কমিশনকে দিয়েও তৃণমূল কংগ্রেসকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। বিজেপি-র বিরুদ্ধে চুপ করে থাকার জন্য এ দিন সিপিএম-কেও আক্রমণ করেন তৃণমূলেনেত্রী। পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও কাশ্মীরের মানুষের পাশে থাকবে তৃণমূল।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত কর্তাদের বসানো হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন্দ্রীয় সরকারকে যে অর্থ সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর পরে দেশে কোনও অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা আর সামাল দিতে পারবেন না বলে দাবি করেন তিনি।
দলের ছাত্র সংগঠনের রাশও এ দিন নিজের হাতে রাখার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর মাসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতৃত্বকে নিয়ে কনভেনশন করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সেখান থেকেই তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নেতাদের তুলে আনবেন বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।