আলাপন মামলায় কোটি কোটি টাকা খরচ করছে মমতার সরকার! বিতর্ক নিয়ে আলোচনার ঝড় প্রশাসনিক মহলে

গত বছর কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে পুরো সময় থাকার বদলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রাজ্য সরকারের কর্মসূচিতে যোগ দিতে হয়েছিল তাঁকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার সুবাদে এখন রাজ্য সরকার তার হয়ে লড়ছে। তাই আইনি খরচের ভার বর্তেছে স্বরাষ্ট্র দফতরের উপরে। 

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনী সহায়তা করতে গিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কেন্দ্রের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে আলাপনকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে রাজ্য। বেশ কয়েক বার আলাপনের হয়ে আদালতে দাঁড়িয়েছিলেন অভিষেক। প্রতিবারই তাঁর সেই ‘ফি’ মিটিয়েছে রাজ্য। সেই খাতে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, গত সপ্তাহেও প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে মামলায় এক বার দাঁড়ানোর ফি হিসেবে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে ২৫ লক্ষ টাকা মিটিয়েছে রাজ্য। কেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় খরচ দিচ্ছে রাজ্য, এই প্রশ্নের উত্তরে কার্যত দ্বিখন্ডিত সরকারি আমলারা। 

Latest Videos

গত বছর কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে পুরো সময় থাকার বদলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রাজ্য সরকারের কর্মসূচিতে যোগ দিতে হয়েছিল তাঁকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার সুবাদে এখন রাজ্য সরকার তার হয়ে লড়ছে। তাই আইনি খরচের ভার বর্তেছে স্বরাষ্ট্র দফতরের উপরে। প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করছেন আলাপন বর্তমানে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (এটিআই) কর্ণধার এবং মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা। ফলে রাজ্যের থেকে আইনি সুবিধা পেতেই পারেন।

আরও পড়ুন  - মঙ্গলবারও অব্যহত বৃষ্টি, ভিজবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা

তবে আরেকটি মতও উঠে এসেছে। আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে আলাপনের চাকরিজীবনের মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। সেই সময়কালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ‘অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিটি’ তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু চাকরিবৃদ্ধির সুযোগ না নিয়ে অবসরগ্রহণ করেছিলেন আলাপন। উল্লেখ্য, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল রাজ্য-কেন্দ্র সঙ্ঘাত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য গতবছর মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে পূর্ণ সময় থাকেননি বাংলার তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন। সেই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনে কেন্দ্র। দিল্লিতেও তাঁকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু, দিল্লি যাওয়ার পরিবর্তে বর্ধিত মেয়াদ পর্যন্ত কাজ না করে নির্দিষ্ট দিনেই অবসর নিয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৩১ মে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তারপরই আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু করেছিল কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রক।

আরও পড়ুন - প্রবল বৃষ্টি বদলে দিল বেঙ্গালুরুর জীবন, অফিস হোক বা এয়ারপোর্ট একমাত্র ভরসা ট্রাক্টরই 

এরপর সেই তদন্ত খারিজের আর্জি জানিয়ে ক্যাট-এর কলকাতা বেঞ্চের দ্বারস্থ হন আলাপন। জানিয়েছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে সেগুলি থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু, সেই সমস্যার সমাধানের আগেই সেই মামলা স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লিতে। এরপর ওই মামলা দিল্লি থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলাপন। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে ওই মামলা কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়। 

তারপর অবশ্য চুপ থাকেনি কেন্দ্রীয় সরকার। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, আলাপনের বিরুদ্ধে শুনানি দিল্লিতেই হওয়া উচিত। চার্জশিট যখন দিল্লি থেকে গিয়েছিল, দিল্লিতেই মামলার শুনানি হবে। সিএটি-র নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হলেও, তা দিল্লি হাইকোর্টেই জানাতে হবে। কলকাতায় নয়। 

আরও পড়ুন - চাল-ডালের সঙ্গে এবার বিক্রি হবে মদ? কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি রেশন ডিলারদের

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ২০ সেপ্টেম্বরেও নির্দেশিকা দিয়ে আইনজীবী অভিষেককে ২৫ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। এ পর্যন্ত মোট কয়েক কোটি টাকা আইনি খরচ মেটানো হয়েছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury