বিজেপি পুরো দিল্লি নিয়ে আসতে চাইলে আসুক। বাংলায় একটা যুদ্ধ হয়ে যাক। আমার সঙ্গে মানুষ থাকবে বিজেপির সঙ্গে গুন্ডা থাকবে, তারপর লড়াই হবে। কোচবিহার এর সমাবেশ থেকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা
কোচবিহারের রাসমেলা ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন সবাইকে বলবো জোট বাঁধুন। আপনারা হাঁটু জল পর্যন্ত নামলে আমি গলা জল পর্যন্ত নামবো। দরকার হলে আমি মৃত্যু বরণ করবো কিন্তু আপনাদের মরতে দেব না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কোচবিহার হয়তো আমরা একটা লোকসভায় হেরেছি। কিন্তু মানুষ দেখতে পাচ্ছে কিভাবে বিজেপি শান্ত দলকে অশান্ত করেছে। তারা একটা নির্বাচনে হয়তো জিতেছে কিন্তু বাকি সময় তৃণমূল থাকে মানুষের সঙ্গে। সঙ্গে মমতা বলেন, আমরা ভোটের জন্য মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করি না। তৃণমূল কংগ্রেস এমন দল যারা মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ করে না। সঙ্গে নিচুতলার কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে নির্দেশ দেন মমতা। তিনি আরো বলেন, আপনারা ৩৪ বছর লড়াই করেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে, আগামী দিনে আরো লড়াই করতে হবে। সবাইকে দলবেঁধে লড়াই করতে হবে। লড়াই না করলে কবিগুরুর জাতীয় সঙ্গীত বিজেপি বদলে দেবে বলেও আশঙ্কা করেন মমতা।দলের কর্মীদের মমতা আরও বলেন, আমাকে কথা দিন... বিজেপি ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবেন না। যেভাবে হোক রুখে দেবেন।
দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জন্য কড়া বার্তা মমতার
আমি কোচবিহারে নতুন আসছি না। ৮২ সালে আমি এখানে জনসংযোগ যাত্রা করেছিলাম। যারা প্রথম দিন থেকে আছে তারা আমাদের সঙ্গে আছে। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একদুজন আছে যারা জোয়ারে যেমন আসে ভাঁটার টানে তেমন চলে যায়। কিন্তু যারা প্রথম দিন থেকে আছে তারা আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা অনেক লড়াই করেছি এখানে। আগামী দিনে আরো অনেক লড়াই বাকি আছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে মমতা বলেন, যারা ভালো কাজ করে না তারা টিকিট পাবে না। তাই অনেকে টিকিট না পাওয়ার ভয়ে অন্য দলে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি বলি ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। এখানে আরএসএস এসেছে। তারা বলছে বিজেপিকে ভোট দাও। আরএসএস এর গুন্ডা তারা আমাদের হিন্দু ধর্ম শেখাচ্ছে। একই সঙ্গে এদিন মমতা বলেন, লোকসভা নির্বাচনে অনেকেই আমাদের ভোট দেননি। সবাইকে বলবো বিধানসভা ভোটে আমাদের আশীর্বাদ করবেন।
আরও পড়ুন-'মুসলিম ভোটাররা আপনার জাগির নয়', বিহার ভোট নিয়ে মমতার কটাক্ষের পালটা জবাব ওয়াইসির
কেন্দ্রীয় সরকার এর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মমতা
কোচবিহারের সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী বলেন,কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়ে কথা রাখেনি। সেই কারণে আমরা নিজেরাই রাজ্য পুলিশ দিয়ে নারায়ণী সেনা তৈরি করে দিয়েছি। মেখলিগঞ্জে এই নারায়ণী সেনার দফতর হবে। যদিও আগেই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে এই দিন মমতা বলেন, দিল্লির বিজেপি সরকার তাদের এই মানবিকতা হলো না যে ট্রেনের ভাড়া দেবে। আমরা নিজেরা ট্রেনের ভাড়া দিয়েছি। বিজেপি সরকার মিথ্যা কথা বলে এখান থেকে ভোট নিয়ে গেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সময় তাদের পাওয়া যায়নি।
তৃণমূল সরকার এর উন্নয়ন
আগামী দিনে আমাদের সরকার আবার আসবে, আমরা আবার মানুষকে বিনা পয়সায় রেশন দেব। কোচবিহার থেকে এই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরো বলেন, এখন আমরা রাজ্যের দশ কোটি মানুষকে এই পরিষেবা দিচ্ছি। আগামী দিনে আরো পরিষেবা দিয়ে যেতে চাই। অন্য রাজ্যের তুলনা করে মমতা বলেন, আর কোন রাজ্য এই ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোন জায়গায় কাউকে বাকি রেখেছি এটা বলবেন না। সবার জন্য কাজ হয়েছে। আগামী দিনে দরকার হলে আরো কাজ হবে। লোক সঙ্গীত থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষের জন্য আমরা কাজ করেছি। শিল্পীদের জন্য অনুদান দেওয়া হয়েছে।
মানুষের প্রতি মমতার আবেদন
মা মাটি মানুষের সরকার কোন দিন প্রতারক হতে পারে না। আমরা মিথ্যা কথা বলে ভোট নিই না। রাসমেলা ময়দানের দাঁড়িয়ে এই কথা বললেন মমতা। সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যা বলি তাই করি। বিজেপির মিথ্যা কথা বলার চাদরটা সরিয়ে দিন। কোচবিহার থেকে শুরু হয় বাংলা, সবার আগে কোচবিহারকে রক্ষা করতে হবে আমাদের।
তৃণমূল নেতাদের ফোন বিজেপির
বিজেপির কোন লজ্জা নেই তারা আমাদের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে ফোন করছে। এদিন সমাবেশ থেকে এই কথা বললেন মমতা। তিনি আরো বলেন, আমাদের রাজ্য সভাপতিকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলছে। তাদের সামান্য সৌজন্য নেই। অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করছে তার সঙ্গে বিজেপি নেতারা বসতে চাইছে বলেও জানান মমতা। বিজেপির সামান্য সৌজন্য নেই বলে কটাক্ষ করেন মমতা।