অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ছাত্রছাত্রীর প্রেম। তারই শাস্তি হিসেবে সালিশি সভা বসিয়ে জোর করে নাবালিকার বিয়ের নিদান দিল গ্রামের মাতব্বররা। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতেই বিবস্ত্র করে মারধর করা হল ওই নাবালিকা ছাত্রী এবং তার মাকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার অন্তর্গত নিউ মধুবন এলাকায়। আহত অবস্থায় ওই নাবালিকার মা কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকারই বাসিন্দা এক কিশোরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ওই নাবালিকার। এই নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। সোমবার সন্ধ্যায় ওই নাবালিকার বাড়িতে আসে ওই কিশোর। নাবালিকার পরিবারের দাবি, স্কুলের প্রোজেক্ট দিতেই এসেছিল সে। তখনই ওই কিশোর এবং নাবালিকাকে ধরে সালিশি সভা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাবালিকা এবং কিশোরের পরিবারকেও সেখানে ডাকা হয়।
আরও পড়ুন- ড্রেস কোড মানা হয়নি, ছাত্রীদের অর্ধনগ্ন করে শাস্তি বোলপুরের এক স্কুলের
নাবালিকার পরিবারের দাবি, সালিশি সভাতেই কিশোরের সঙ্গে নাবালিকার বিয়ের প্রস্তাব দেয় কয়েকজন গ্রামবাসী। নাবালিকার মা তার প্রতিবাদ করতেই নারায়ণ মাহাতো, চাঁদু মাহাতো, অঞ্জনা পাল, তিলক মাহাতো নামে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকা তার মাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মারা হয়। দু' জনকেই বিবস্ত্রও করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমন কী, খুনের হুমকিও নাকি দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্ত ছাত্রীর পরিবার।
অভিযুক্তদের অবশ্য পাল্টা দাবি, সালিশি সভায় ওই নাবালিকার বিয়ে দিতে বলা হয়নি। উল্টে মীমাংসা করার চেষ্টা হয়েছিল। অভিযুক্তদের আরও দাবি, ওই নাবালিকা এবং তার মায়ের জন্য এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। মেয়েকে শাসন করার জন্য বলা হয় নাবালিকার মাকে। কিন্তু ওই নাবালিকার মা উত্তেজিত হয়ে পড়ায় গন্ডগোল শুরু হয় বলে পাল্টা দাবি করেছে অভিযুক্তরা। নাবালিকার মা নিজেই প্রথমে প্রতিবেশী এক মহিলাকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কালনা থানার পুলিশ।