নাবালিকার গণধর্ষণকাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে নদিয়া হাঁসখালি। সোমবার সকাল থেকেই বিজেপির ডাকে এখানে চলছে ১২ ঘন্টার বনধ। এদিন ওই মৃত নাবালিকার বাড়িতে যাবে আজ বাম-বিজেপি-র মহিলা প্রতিনিধি দল।
নাবালিকার গণধর্ষণকাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে নদিয়া হাঁসখালি। সোমবার সকাল থেকেই বিজেপির ডাকে এখানে চলছে ১২ ঘন্টার বনধ। সকাল থেকেই বন্ধ দোকানপাট বন্ধ। যদিও যানচলাচল স্বাভাবিক। উল্লেখ্য, ১৪ বছরের নাবালিকাকে জন্মদিনে ডেকে মদ্যপান করায় তৃণমূল নেতার ছেলে ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে।অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। পৈশাচিক ঘটনা এখানেই শেষ নয়, অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হাঁসখালি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপাল গোয়ালাকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ওই মৃত নাবালিকার বাড়িতে যাবে আজ বাম-বিজেপি-র মহিলা প্রতিনিধি দল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে নাবালিকা প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সে। অভিযোগ এরপরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে ওই নাবালিকা। এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল। এরপরেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।এদিকে নৃশংসঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। তাই মাঝে কয়েকদিন কেউ কিছু জানতে পারেনি। তবে সত্য কখনও চাপা থাকে না। ঘটনার পরেই শনিবার হাঁসখালি থানায় নাবালিকার পরিবারের তরফে অভিযোগে জানানো হয়। মেয়ের মৃত্যুর পরে জোর করে দাহ করে দেওয়া হয়েছে বলে ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে। আর তাতে জড়িত ছিল ব্রজগোপাল এবং তার দলবল। এরপরেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে ব্রজগোপালকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন, বীরভূম গণহত্যায় নাটকীয় মোড়, সিবিআই জালে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের শ্বশুর
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে আরও একবার অভিযোগ তুলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন,'যারা এধরণের অত্যাচার করছে , তাঁদের ভয় বলে কিছু নেই। তা বোঝাই যাচ্ছে।' বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ বলেছেন, 'অন্য রাজ্যের ছোট ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে নিজের রাজ্যের ঘটনাকে চাপা দেওয়া যাবে না। পশ্চিমবঙ্গে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের আস্ফালন নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক ঘটনা। ফের পুলিশি নিষ্ক্রয়তা দেখা গেল। পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়টা দেখবেন। তবে পুলিশ এখানে ঠুঁটো জগন্নাথ। এখন শাসকদলের লোকজনের ইচ্ছেপূরণ না করতে পারলে জীবন-জীবিকা দুটোই শেষ হয়ে যাবে। বিরোধীরা প্রতিবাদ করলেই তাঁদের চুর করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুরো মগের মুলুক চলছে। 'যদিও এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।