মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে, দেড় বছর ধরে গোয়াল ঘরের পাশে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন বৃদ্ধ দম্পতি

বাসন্তীর বাসিন্দা রবিরাম ছোটবেলায় অবশ্য আর পাঁচটা সাধারণ ছেলে মতোই ছিল। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে সংসারের হাল ধরতে কাজে ঢুকে পড়ে। ক্যানিংয়ে ফার্নিচার তৈরির কাজে যোগ দিয়েছিল। 

করোনা পরিস্থিতির (Corona Situation) জেরে দীর্ঘদিন ধরেই ছেলের চিকিৎসা (Treatment) করাতে পারেননি বৃদ্ধ দম্পতি (Old Couple)। যার কারণে বছর আঠাশের রবিরামের মানসিক রোগ (Mental) আরও বেড়ে গিয়েছে। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এদিক ওদিক চলে যায় সে। হাতের সামনে যাকে পায় তাঁকেই মারধর করে। প্রতিবেশীদের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ছেলের এই কাজের জন্য সবার কাছ থেকেই অভিযোগ পাচ্ছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। আর সেই কারণেই খানিক বাধ্য হয়েই প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে গোয়াল ঘর লাগোয়া একটি স্যাঁতস্যাঁতে মাটির ঘরের মধ্যে শিকল দিয়ে ছেলেকে বেঁধে রেখেছেন সুভাষ নাইয়া ও লক্ষ্মীবালা নাইয়া। চরম অমানবিক এই ধরা পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।

বাসন্তীর বাসিন্দা রবিরাম ছোটবেলায় অবশ্য আর পাঁচটা সাধারণ ছেলে মতোই ছিল। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে সংসারের হাল ধরতে কাজে ঢুকে পড়ে। ক্যানিংয়ে ফার্নিচার তৈরির কাজে যোগ দিয়েছিল। ২০০৯ সালে আয়লা হলে এলাকার মানুষের রুটি রুজির আকাল দেখা দেয়, সেই সময় গ্রামের যুবকরা ভিন রাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দেয়। রবিরামও তাঁদের সঙ্গেই সেই পনেরো বছর বয়সে মুম্বই গিয়েছিল কাজের জন্য। কিন্তু, এক বছর পর ফিরে আসে অসুস্থ অবস্থায়। সেই থেকেই সে অসুস্থ। প্রথমে রোগ এতটা প্রকট না হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার অসুখ বাড়তে শুরু করে। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- পুলিশের পরীক্ষা দিতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অধ্যাপকের গাড়ির ধাক্কায় পা ভাঙল পরীক্ষার্থীর

আরও পড়ুন- নির্বাচনের আগে পরপর বোমাবাজিতে উত্তপ্ত সামশেরগঞ্জ, মোতায়েন রয়েছে পুলিশ

বৃদ্ধ বাবার এক চোখ দৃষ্টিহীন, আর বয়স্ক মা হৃদরোগে আক্রান্ত। তবুও ছেলের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছেন। বালিগঞ্জ মানসিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন দেখিয়েছেন ছেলেকে। কিন্তু সেভাবে সুস্থ না হওয়ায়, পার্কসার্কাসে আরও একটি মানসিক হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসা শুরু করেন তাঁরা। সেখানেই গত সাত-আট বছর ধরে রবিরামের চিকিৎসা চলছিল। 

আরও পড়ুন- 'আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমর্থক, তাঁকেই ভোট দেব', ভবানীপুরের ভোটারের কথায় থমকালেন সুভাষ সরকার

কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউন হওয়ায় সব কিছুই বদলে যায়। তাঁদের জীবন পুরো ওলটপালট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে ছেলেকে মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি সুভাষ। ফলে চিকিৎসার অভাবে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে রবিরাম। মাঝে মধ্যেই একে তাঁকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়, প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঢুকে ক্ষতি করে, ভাঙচুর চালায়। এই পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষই তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই থেকেই বাড়ির গোয়াল ঘরের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সারাক্ষণ শিকল বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে রবিরাম। ওই অবস্থাতেই চলছে স্নান, খাওয়া সবকিছুই।

High Court stays order on Mithun Chakrabortys FIR  quashing plea   on dialogue case RTB

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury