বিক্ষোভের জেরে দশ দিন বন্ধ রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, চরম সমস্য়ায় রায়গঞ্জবাসী

  • নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের জের
  • ১৫ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রাধিকাপুর এক্সপ্রেস
  • রায়গঞ্জ থেকে কলকাতায় যাতায়াত করার একমাত্র ট্রেন
  • ব্যাপক সমস্যায় সাধারণ মানুষ
     

debamoy ghosh | Published : Dec 24, 2019 10:29 AM IST / Updated: Dec 24 2019, 04:00 PM IST

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে হিংসাত্মক বিক্ষোভ থেমেছে বেশ কয়েকদিন হল। কিন্তু তার জেরে এখনও হয়রানির শিকার হচ্ছেন রায়গঞ্জের সাধারণ মানুষ। কারণ বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকাতায় যাতায়াতকারী একমাত্র ট্রেন রাধিকাপুর এক্সপ্রেস দশ দিন পরেও চালু হল না। ট্রেন বন্ধ থাকায় রোগী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, প্রত্যেকেই মারাত্মক সমস্য়ায় পড়েছেন। কবে ট্রেন চালু করা যাবে, সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানাতে পারেনি রেল। 

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে গোটা রাজ্য জুড়েই রেলের সম্পত্তির  উপরে বেলাগাম আক্রমণ চলেছে কয়েকদিন আগে। যার সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায়। বিক্ষোভ চলাকালীন মালদহের ভালুকা রোড স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণেই উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার সংযোগকারী প্রায় সব ট্রেনই কয়েকদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তার মধ্যে ধীরে ধীরে বেশ কিছু ট্রেন ঘুরপথে চালানোর ব্যবস্থা হলেও, রাধিকাপুর এক্সপ্রেস এখনও বন্ধই রয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে রায়গঞ্জের সঙ্গে কলকাতার সংযোগকারী একমাত্র এই ট্রেনটি। ফলে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে বা ব্যবসার কাজে যাঁরা আসতে চান, তাঁরা প্রচণ্ড অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। মঙ্গলবারও এই ট্রেন বাতিল থাকবে বলে জানিয়েছে রেল। ফলে এ দিনও বহু যাত্রী সকালে স্টেশনে এসে টিকিট বাতিল করেন। 

আরও পড়ুন- বিজেপি-কেই তাড়িয়ে দেবে মানুষ, ঝাড়খণ্ডের ফল দেখে আরও উজ্জীবিত মমতা

আরও পড়ুন- নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে পদক্ষেপ, বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি কলকাতা হাইকোর্টের

ট্রেন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন যাত্রীরা। মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনু বন্ধু লাহিড়ী বলেন, 'রাধিকাপুর এক্সপ্রেস বাতিল থাকায় রায়গঞ্জ আর কালিয়াগঞ্জের ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া ব্যবসার উপর চাপও বাড়ছে। আমরা মৌখিকভাবে কাটিহারের ডিআরএম ও রায়গঞ্জ স্টেশনে অভিযোগ জানিয়েছি। তারাও সঠিকভাবে এই ট্রেন চালুর বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এর পর আমরা ব্যবসায়ীরাও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।'

অবিলম্বে ট্রেন চালু করার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই রায়গঞ্জ পুরসভার পক্ষ থেকেও পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস কাটিহারের ডিআরএম- কে একটি চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে ট্রেন বন্ধ থাকার জন্য রায়গঞ্জের বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। যাঁদের জরুরি দরকারে কলকাতায় আসতেই হবে, তাঁরা সড়কপথে মালদহ এসে ট্রেন ধরছেন। এতে অর্থ এবং সময়, দুই বেশি লাগছে। অনেকে আবার বিকল্প হিসেবে বাসের টিকিট কাটছেন। 

ট্রেন চালুর দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, 'রেল নিয়ে রায়গঞ্জবাসীর অনেক দাবি ছিল। এখানে ভোটে জিততে বিজেপি ট্রেন নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছিল। কিন্তু এখন একমাত্র রাধিকাপুর এক্সপ্রেসটাই বাতিল করে রেখেছে। সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলছে বিজেপি। অবিলম্বে ট্রেন চালু না হলে আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটব।' ট্রেন নিয়ে রায়গঞ্জের ক্ষোভ বাড়তে থাকলেও এ দিনও কবে ট্রেন চালু হবে, তা নিয়ে রেলের তরফে কোনও আশ্বাসই দেওয়া হয়নি। 
 

Share this article
click me!