কৃষিজাত দ্রব্য বিলির ক্ষেত্রে স্বজন-পোষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার জেরেই শুক্রবার ব্লক কৃষিদফতরে বিক্ষোভ দেখায় নন্দীগ্রামের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক বিজেপি কর্মী।
একাধিক দাবি তুলে রাজ্য সরকারের কিসান মান্ডিতে (kisan mandi) বিক্ষোভ (Agitation) দেখানোকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (Friday) ধুন্ধুমার অবস্থা হয়েছিল নন্দীগ্রামের (Nandigram) হরিপুরে। ওই কিসান মান্ডির সামনে প্রায় শতাধিক বিজেপি কর্মী বিক্ষোভ (BJP Worker Agitation) দেখিয়েছিল। বিক্ষোভের পাশাপাশি কিসান মান্ডির এক্সটেনশন অফিসার বিদ্যুৎবরণ মণ্ডলকে তারা বেধড়ক মারধর (Beaten) করে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম (Injured) হন ওই আধিকারিক। ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। এই ঘটনায় ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ (Police)। আর তার জেরে শুক্রবারের পর শনিবারও (Saturday) নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে নন্দীগ্রামে আজ ১২ ঘণ্টার বনধ (Bandh) ডেকেছে বিজেপি। সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। রাস্তায় টায়াল জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা।
কৃষিজাত দ্রব্য বিলির ক্ষেত্রে স্বজন-পোষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার জেরেই শুক্রবার ব্লক কৃষিদফতরে বিক্ষোভ দেখায় নন্দীগ্রামের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক বিজেপি কর্মী। তাদের অভিযোগ, নন্দীগ্রাম কিসান মান্ডিতে তৃণমূলের লোকেদের বেছে বেছে বীজ বিলি-সহ একাধিক বিষয়ে অনিময় করা হচ্ছে। এই দাবিতেই শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ হরিপুর ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের নেতৃত্বে কিসান মান্ডিতে একটি ডেপুটেশন (Deputation) দেওয়া হয়। এই দলে ছিলেন পুরুষ ও মহিলারা। কিন্তু, তাঁরা সেখানে পৌঁছানোর পরই বদলে যায় পরিস্থিতি। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন- ২০২২ সালের দুর্গাপুজোয় ১১ দিনের দীর্ঘ ছুটি, বড় ঘোষণা রাজ্য সরকারের
মান্ডির বাইরে যখন মিছিল এসে পৌঁছায় তখন বিশেষ কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন বিদ্যুৎবরণ মণ্ডল। শুরু থেকে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখালেও তখন পরিস্থিত উত্তপ্ত হয়নি। কিন্তু, ঠিক সেই সময় ওই আধিকারিককে সামনে দেখতে পেয়েই আর মাথার ঠিক রাখতে পারেনি বিজেপি কর্মীরা। সোজা গিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয় তারা। তাঁকে রীতিমতো কিল, চড়, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। পরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ওই আধিকারিককে উদ্ধার করেন। এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। বিজেপির অভিযোগ, কৃষি দফতরের তরফে যে সব সুযোগ সুবিধা সাধারণ মানুষ পেয়ে থাকেন, তা প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের পরিচিতদের দিচ্ছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের মানুষ সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল বলেন, “বার বার বলা সত্ত্বেও কৃষি দফতরের আধিকারিকরা রাজনৈতিক রং দেখে পরিষেবা দিচ্ছেন। শাসকদলের কর্মীদেরই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।” তবে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাসের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই নন্দীগ্রামে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি নেতা কর্মীরা। রাজ্য সরকারের কাজকর্মে যখন গোটা রাজ্যের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন তখন নন্দীগ্রামে কিসান মান্ডির উপর এভাবে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ডিউটিতে থাকা অবস্থায় কীভাবে এক সরকারি কর্মীকে মারধর করা হল? এনিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।