ত্রিপুরায় গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেন রাজীব। যোগ দেওয়ার পর মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেককে আলিঙ্গনও করেন। এরপর তিনি বলেন, "স্বীকার করছি ভুল করেছিলাম। আমি অনুতপ্ত।" এনিয়ে রাজীবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
প্রায় ৯ মাস পর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee)। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবার তৃণমূলে ফিরলেন তিনি। ত্রিপুরায় (Tripura) গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) জনসভা থেকে তৃণমূলে (TMC) যোগ দিলেন। যোগ দেওয়ার পর মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেককে আলিঙ্গনও করেন। এরপর তিনি বলেন, "স্বীকার করছি ভুল করেছিলাম। আমি অনুতপ্ত।" এনিয়ে রাজীবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি (BJP)।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, "উনি একটা ইস্তফা পত্র দিয়ে যেতে পারতেন। এখন যে দলে গিয়েছেন এখন তার শ্রুতি করতে হবে। আমার মনে হয় না ওঁর বিশেষ গুরুত্ব আছে। বিজেপি তো ৭৭টা আসন জিতেছিল। আর উনি ৫০ হাজার ভোটে হেরেছিলেন। আমরা সবাইকে সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করি।"
পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, "অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে বলার কিছু নেই,চেষ্টা করুক সর্বভারতীয় নেতা হওয়ার। লড়াই করুক। দেখা যাবে কতগুলো আসনে জামানত জব্দ হন।"
আরও পড়ুন- 'স্বীকার করছি ভুল করেছিলাম', ৯ মাস পর তৃণমূলে ফিরলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা ভোটের (Assembly Election) মাসদুয়েক আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব। মমতার (Mamata Banerjee) ছবি হাতে নিয়ে চোখের জলে তৃণমূল ছেড়েছিলেন তিনি। তারপর তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। পাল্টা তাঁকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। নির্বাচনের প্রচার সভা থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের অন্য নেতারা। 'গদ্দার' তকমাও জুটেছিল রাজীবের ভাগ্যে। এরপর বিজেপির টিকিটে ডোমজুড় কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন তিনি। কিন্তু, ফলপ্রকাশের পর রীতিমতো হতাশ হন। নিজের কেন্দ্রতেও তিনি জিততে পারেননি।
আরও পড়ুন- 'খুঁটি পুজোটা হয়েছে', ত্রিপুরার সভায় বিপ্লবদেবের সরকারকে 'বিসর্জনের' হুঁশিয়ারি অভিষেকের
আরও পড়ুন- কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই, কোথাও আবার রবিবার বলে ফাঁকা ট্রেন
ডোমজুড় আসন ছিল রাজীবের ঘরের মতোই। হাতের তালুর মতোই ওই আসন ছিল তাঁর নখদর্পণে। কিন্তু, বিজেপির টিকিটে সেখানে ৫০ হাজার ভোটে হারতে হয়েছিল তাঁকে। তারপর থেকেই বিজেপিতে তাঁর মোহভঙ্গ হতে শুরু করে। বিজেপির অবস্থানের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকী, রাজ্য সরকারের 'পাশে' থাকার বার্তাও দিয়েছিলেন। বাংলায় যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে সুর চড়িয়েছিল বিজেপি, ঠিক তখনই ফেসবুক পোস্টে রাজীব লিখেছিলেন, 'সমালোচনা তো অনেক হল। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি, আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেবেন না। আমাদের সকলের উচিত, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস - এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।' পাশাপাশি মমতার প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। অবশেষে সব জল্পনাকে সত্যি করে রবিবার ত্রিপুরায় অভিষেকের সভায় তৃণমূলে যোগ দিলেন তিনি।