তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ নিহত হওয়ার পর কাছেই বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যদিও তৃণমূলের বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন টিভি বা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছিল। কিন্তু সেই বক্তব্য খারিজ করে দিলেন নিহত মিনা বিবির ছেলে ভাসান শেখ।
প্রতিনিধি- আশিস মণ্ডল, বীরভূমের রামপুরহাটের (Birbhum, Rampurhut) বগটুই (Bagtui) গ্রামে আটজনের মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুললেন নিহত ভাদু শেখের (Bhadu Shek) আত্মীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে কুপিয়ে খুন করে হয়। তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুনে (Fire)পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ৮ জনের মধ্যে ৬ জন মহিলা এবং ২ জন শিশু রয়েছে। দুই শিশুকেও একইভাবে কুপিয়ে খুন (Murder) করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ নিহত হওয়ার পর কাছেই বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যদিও তৃণমূলের বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন টিভি বা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছিল। কিন্তু সেই বক্তব্য খারিজ করে দিলেন নিহত মিনা বিবির ছেলে ভাসান শেখ। ভাসান শেখ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি পাশেই পশ্চিম পাড়ায় পিসির বাড়িতে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ৪৫ বছর বয়সী মা মিনা বিবি'কে প্রথমে কুড়ুল দিয়ে ঘাড়ে মাথায় এবং পেটে কোপ মারা হয়েছে, তারপর পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার সাক্ষী রয়েছেন তার ভাইপো এবং এক ভাগ্নি। কারণ ওই বাড়িতে ঢোকার আগে দুষ্কৃতীরা বোমা মারে। সেই বোমার শব্দে ভাইপো এবং ভাগ্নি দৌড়ে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। বাথরুমের পাশে ঝোপের আড়ালে অন্ধকারে লুকিয়ে ছিল। তারাই দেখেছে, দুষ্কৃতিরা তাঁর মাকে কুড়ুল দিয়ে একের পর এক কোপ মারে।
একই অভিযোগ করেছেন বড়শুল পঞ্চায়েতের কামাখ্যা গ্রামের তৃণমূল সদস্য নিউটন শেখ। তাঁর অভিযোগ, প্রত্যেককে কুড়ুল দিয়ে নৃশংসভাবে কোপানো হয়েছে, তারপর পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, সিবিআই তদন্ত হলে সব জানা যাবে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পশ্চিমপাড়ার আপাং শেখ, নূর মহাম্মদ এবং লালন। এই লালন মূল মাথা বলে লিটন শেখের অভিযোগ। তিনি বলেন, লালন শেখ এখন উত্তর ২৪ পরগনায় এক পীর সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ঘটনার পরই সে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। সেখান থেকে সে এখনও খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
নিউটন সেখের অভিযোগ, ভাদু সেখকে খুন করার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে তার তোলাবাজি। জাতীয় সড়কে যে সমস্ত গাড়ি যায় সেই গাড়ি থামিয়ে তোলাবাজি করতো। এছাড়া জমির দখলদারি পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন লোকের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিত। প্রতিবাদ করায় তাদের হুমকিও দেওয়া হতো। তিনি বলেন, তারা অনেকবার জেলা নেতৃত্বকে এই অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন। এমনকি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে তিনি নিজে চারবার গিয়ে ভাদু শেখের তোলাবাজি কথা জানিয়েছেন। এমনকী যে কোনো মুহূর্তে ভাদু সেখ খুন হয়ে যেতে পারেন একথাও বলেছিলেন। একই অভিযোগ তিনি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীকে এবং আইসি এবং এসডিপিও'কেও জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাদের কথা কেউ শোনেনি বলে জানান।
প্রশ্ন উঠেছে বগটুই গ্রামে একটা বাড়িতে কী করে এত জন লোক ছিল, যাদের এক সঙ্গে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এব্যাপারে লিটন শেখ জানান, সেদিন ভাদু সেখ খুন হওয়ার পর এলাকার লোকজনকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা না করে গিয়ে ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কারণ বাড়িটির চারিদিকে পাঁচিল ছিল, মজবুত গেট ছিল। তাই তারা বাড়িটিকে নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু দুষ্কৃতীরা সেই গ্রিল ভেঙ্গে বাড়ির ভেতরে ঢুকে একে একে প্রত্যেককেই নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল।
'অসৎ বুদ্ধিজীবীরা রাজ্য চালালে কী হয়', রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে টুইট রণবীর শোরের
'ভাদু হত্যার অত্যতম চক্রী ছোটা লালন', রামপুরহাটের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি পঞ্চায়েত সদস্যের
শারীরিক যৌন উন্মাদনা বাড়িয়ে তুলতে জুড়ি নেই সুগন্ধীর, জেনে নিন কোন সুগন্ধীর কী গুণ রয়েছে