স্কুলের কর্মী ও শিক্ষিকার গাফিলতিতেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে শিক্ষিকাকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান কলমাপুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দারা। এই ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ছাত্রীর অভিভাবক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুল ছুটি (After School) হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, স্কুল (School) থেকে বের হতে পারেনি এক খুদে (Student)। যদিও সেদিকে খেয়াল নেই কারও। তাকে স্কুলের মধ্যে রেখেই তালা ঝোলানোর অভিযোগ উঠল তিন শিক্ষিকার (Teacher) বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) নয়াগ্রাম থানার কলমাপুকুরিয়া এলাকায়। স্কুলের কর্মী (School Staff) ও শিক্ষিকার গাফিলতিতেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে শিক্ষিকাকে ঘিরে বিক্ষোভও (Teacher Agitation) দেখান কলমাপুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দারা। এই ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ছাত্রীর অভিভাবক (Parent) থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুলে তালাবন্দি অবস্থায় থাকা খুদে পড়ুয়ার নাম অঞ্জনা টুডু। তার বয়স মাত্র ৬ বছর। কলমাপুকুরিয়া পূর্ব শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া সে। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও তাকে স্কুলে পাঠিয়েছিল তার মা। এদিকে স্কুল ছুটি হওয়ার পর প্রতিদিনই সঠিক সময় বাড়ি ফিরত অঞ্জনা। কিন্তু, গতকাল সব পড়ুয়ারা বাড়ি ফিরলেও সে আর বাড়ি ফিরছিল না। অনেক্ষণ ধরে মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তার মা। তবে দীর্ঘক্ষণ মেয়েকে বাড়ি ফিরতে না দেখে চিন্তায় পড়ে যান তিনি। এরপর বাধ্য হয়ে চারিদিকে ছোট্ট মেয়ের খোঁজ শুরু করেন অঞ্জনার বাবা মা-সহ পাড়া প্রতিবেশীরা। অবশেষে বাবা মায়ের সন্দেহ হয় স্কুলেই আটকে নেই তো অঞ্জনা?
আরও পড়ুন- বগটুইকাণ্ড গড়াল সুপ্রিম কোর্টে, জনস্বার্থ মামলা দায়ের হিন্দু সেনার
আরও পড়ুন - 'কাউকে ছাড়া হবে না', তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ মমতার
সেই মতো স্কুলের মধ্যে অঞ্জনার খোঁজ চালান তাঁরা। যদিও ততক্ষণে স্কুলের গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গ্রামের অন্যান্যরাও। এরপর গ্রামবাসীরা মিলে স্কুলের গেটে তালা ভাঙেন। এরপর অফিস ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় অঞ্জনাকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে যান শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা উজ্জ্বল রানি সাউ। তখন তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। শিক্ষিকা ও স্কুলের কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন তাঁরা। গ্রামবাসীর অভিযোগ ছোট-ছোট শিশুরা স্কুলে পড়ছে। অথচ তারা সকলে বেরিয়েছে কিনা খেয়াল না করেই স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে সকলে চলে যাচ্ছেন শিক্ষিকা ও স্কুলের কর্মীরা। এদিনের ঘটনায় ছোট্ট অঞ্জনার প্রাণহানি হতে পারত বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার বাবা-মা।
আরও পড়ুন- 'উর্দিতে দাগ নেব না' - বগটুই-এর ঘটনায় কি কোপ সেই আইপিএস অফিসারের উপর, চূড়ান্ত বিভ্রান্তি
ঘটনার পর কলমাপুকুরিয়া পূর্ব শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের তিন শিক্ষিকা উজ্জ্বল রানি সাহু, বন্দনা কুইলা, শকুন্তলা পাইকের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ফুঁসতে থাকেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন নয়াগ্ৰাম থানার পুলিশ আধিকারিকরা এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দাবি তোলেন অঞ্জনার পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে অভিযুক্ত শিক্ষিকারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফেও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপরই সন্ধ্যায় ঘেরাও-মুক্ত হন উজ্জ্বল রানি সাউ।