বগটুইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। আর এবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। হিন্দু সেনার সর্বভারতীয় সভাপতির তরফে বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়ের করা হয়।
বগটুইয়ের (Bagtui Case) ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। আর এবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। হিন্দু সেনার (Hindu Sena) সর্বভারতীয় সভাপতির তরফে বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়ের করা হয়। সিট (Special Investigating Team) বা সিবিআই (CBI) দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করানো হোক বলেই আবেদন করেছেন তিনি। পাশাপাশি ন্যায় ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে ঘটনার তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
পিটিশন দায়ের করার পর হিন্দু সেনার তরফে জানানো হয়, "রাজ্য সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ। রাজ্যের মানুষকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। এমনকী এত বড় ঘটনার পরও দোষীদের ধরতেও অসফল। উলটে সন্ত্রাসের ভয়ে নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ। এতে মানুষের মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে।" আর সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দায়ের করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই বগটুইয়ের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।
আরও পড়ুন- 'উর্দিতে দাগ নেব না' - বগটুই-এর ঘটনায় কি কোপ সেই আইপিএস অফিসারের উপর, চূড়ান্ত বিভ্রান্তি
জনস্বার্থ মামলায় মূলত আর্জি জানানো হয়েছে, একজন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে সিট গঠন করে তদন্ত করা হোক। যদি তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে অতি অবশ্যই যেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)-এর হাতে এই তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। সিট তদন্ত করুক বা সিবিআই, এ ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় যতগুলি এফআইআর দায়ের হয়েছে, মামলা যতদূর এগিয়েছে তা যেন তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন - 'রামপুরহাটকাণ্ডে আইসি-এসডিপিও নিজেদের দায়িত্ব পালন করেননি', সাফ জানালেন মমতা
এদিকে বগটুইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টে নয়, জনস্বার্থ মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টেও। সব মামলা একত্রিত করেই বৃহস্পতিবার শুনানি হয়। সেখানেও এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। তবে গতকাল হাইকোর্টের তকফে কোনও রায়দান করা হয়নি। আজ এই মামলার রায় দিতে পারেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব রায়।
সোমবারই রামপুরহাটের বকটুই গ্রামে বোমা হামলায় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের মৃত্যু হয়। তিনি রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার পরই গ্রামের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এরপর সেই রাতেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ। ভাদু শেখের মৃত্যুর বদলা নিতেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন - 'কাউকে ছাড়া হবে না', তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ মমতার
এই ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে। মানবাধিকার কমিশন থেকে মহিলা কমিশন, সকলেই এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজেরাই বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার বগটুইতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কাউকেই রেয়াত করা হবে না সাফ জানিয়ে দেন তিনি। তাঁর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় আনারুল হোসেন নামে রামপুরহাট-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতিকে।