‘কেষ্টদা’ এখন জেলে! তিন কোটি টাকা থেকে দেড় লক্ষে এসে ঠেকল দলীয় কার্যালয়ের কালীপুজোর বাজেট, কমল সোনার অলঙ্কারও

প্রিয় ভক্তের অবর্তমানে শ্যামা মায়ের পুজোর কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে চলছিল জোর চর্চা। এবছর জেলা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা নিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।  


 

Web Desk - ANB | Published : Oct 25, 2022 5:04 AM IST / Updated: Oct 25 2022, 11:16 AM IST

জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে। তাঁর অনুপস্থিতিতে একেবারে স্বল্প আড়ম্বরেই এ বছর শ্যামাপুজো সারা হল বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের। বীরভূমের বিখ্যাত এই কালীপুজো ‘কেষ্টদা’র পুজো নামেই খ্যাত। এত বছর ধরে এই পুজোয় নিজের হাতে কালীমূর্তিকে সোনার গয়না পরিয়ে দিতেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত। তিনি না থাকায় এবার সেই পুজোয় দেবীর গায়ে উঠল গুটিকয়েক সোনার গয়না।

গত কয়েক মাস ধরেই গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে আসানসোল জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোও কেটে গেছে জেলের অভ্যন্তরে। প্রিয় ভক্তের অবর্তমানে শ্যামা মায়ের পুজোর কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে চলছিল জোর চর্চা। ‘কেষ্টদা’-র ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বরাবর এই পুজোর সমস্ত ব্যবস্থা করে এসেছেন তিনি। নিজে উপস্থিত হয়ে পুজোর যাবতীয় আয়োজন তদারকি করেছেন। প্রত্যেক বছর তাঁর কালীপুজোয় নতুন নতুন চমক থাকত। ২০২০ সালে কোভিডকালেও কালীমূর্তিকে প্রায় সাড়ে ৩০০ ভরির সোনার গয়নায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে দেবীকে সোনার মুকুট, হাতের বাউটি, বাজুবন্ধন, চুড়, কানের দুল, গলার হার মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গয়না দিয়ে নিজে সাজিয়েছিলেন হেভিওয়েট নেতা। 




 

এবছর অবশ্য পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে আলাদা। কালীপুজো এবার কেষ্ট-বিহীন। তাই পুজোর আগের জমক এবছরও বহাল কি না, তা নিয়ে দোনোমনা ছিল দলের অন্দরেই। সেই ধারণাই বাস্তবে বদলে গেল গতকাল। ‘কেষ্টদা’-র পুজোয় এ বছর কালী প্রতিমাকে সাজানো হল মাত্র ৪০ ভরির সোনার গয়না দিয়ে। যে পুজো দেখতে আগে পাশেপাশে বহু জেলা থেকে ঘাসফুল শিবিরের কর্মীরা উৎসাহী হয়ে পৌঁছে যেতেন, সেই পুজোয় এ বার উন্মাদনা দেখা গেল না বীরভূমের কর্মীদের মধ্যেই। এবিষয়ে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কেষ্টদা জেলে। কারও মন ভালো নেই। এত বছর ধরে এই পুজোর সব দায়িত্ব নিজে পালন করে এসেছেন দাদা। সব ব্যবস্থা নিজে করতেন। বর্ধমান থেকেও লোক আসত। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি একেবারেই অন্য রকম। পুজো তো আর বাদ দেওয়া যায় না। ন্যূনতম আয়োজনেই এ বছর পুজো করছি আমরা।’’



 

সূত্রের খবর, গত বছর যে বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না দিয়ে দেবী প্রতিমাকে সাজিয়ে তুলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, সেগুলির বাজার দর ছিল তিন কোটি টাকারও বেশি। সেই বাহুল্য থেকে এ বছর গোটা পুজোর বাজেট এসে ঠেকেছে মোটামুটি দেড় লক্ষের কাছাকাছি। মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জেলা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা নিয়ে এ বছর পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। মলয়ের কথায়, ‘‘জেলা কমিটিতে রয়েছেন প্রায় দেড়শো সদস্য। তাঁদের সকলের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে দেড় লক্ষ টাকার একটি তহবিল তৈরি করা হয়। সেই টাকায় এ বছর পুজো হচ্ছে। লোকজনকে খাওয়ানোও হবে।’’ 


আরও পড়ুন-
দীপাবলির সকাল থেকেই মনোরম রোদ্দুর, হিমেল হাওয়ায় এযাত্রা কি সিত্রাং-এর বিপদ পেরিয়ে গেল বাংলা?
রাত বাড়তেই বেড়ে গেল শব্দবাজির দাপট! পরিবেশের তোয়াক্কা না করেই দীপাবলির উন্মাদনায় বঙ্গবাসী
নন্দীগ্রামে বিজেপি ত্যাগ করলেন বিশিষ্ট ২ নেতা, শুভেন্দুর গড়ে কি এবার দুর্বল হয়ে পড়বে গেরুয়া শিবির?

Read more Articles on
Share this article
click me!