বৃদ্ধার একাউন্টে ঢোকে প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা। আর সেই সুযোগে কোপ মারে গ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি জগতে অনেকেই অনলাইন প্রত্যারণার শিকার হয়ে আসছেন। কেউ ওটিপি দিয়ে আবার কেউ অন্যভাবে প্রতারণা হচ্ছে। কিন্তু এবার প্রতারণার ধরণটা উপভোক্তার স্বচক্ষে ঘটলো। এই ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। মালদহের চাঁচলের ওই ঘটনায় তদন্তে নামার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা প্রশাসনও। তৃণমূলের নেতার কর্মকান্ডকে দুয়ারে লুট বলে কটাক্ষ ছুঁড়েছে বিজেপি। পাল্টা মন্তব্য ছুড়েছে শাসকদলও।
ভুল বুঝিয়ে টিপছাপ নিয়ে বৃদ্ধা বিধবার (Widow) একাউন্ট (Account) থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে আবাস যোজনার (Abas Yojna) প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা (60 thousand)। অভিযোগের তীর শাসকদলের এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বিরুদ্ধে। টাকা ফেরতের দাবি নিয়ে থানা ও বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা। মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের মহানন্দপুর পঞ্চায়েতের মল্লিকপাড়া গ্রামের ওই বৃদ্ধা বিধবা ফাতেমা বেওয়া একাই থাকেন। এক দশক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী মারা যান। স্থানীয় সহযোগিতায় কোনো ক্রমে সংসার চলে যার। তার বাসস্থানটিও বেশ নড়বড়ে। বাঁশের বেড়া ও টিনের ঘরেই দিন গুজরান করছেন ওই বৃদ্ধা।
আরও পড়ুন- '১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে সিট', আনিস হত্যাকাণ্ডের ইস্যুতে বার্তা মমতার
মাথার উপর পাকা ছাদ পাওয়ার আশায় বহুবছর ধরে আবেদন করে আসছিলেন ঘরের জন্য। অবশেষে তার নামও আসে বলে ওই বৃদ্ধা দাবি করেন। বৃদ্ধার একাউন্টে ঢোকে প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা। আর সেই সুযোগে কোপ মারে গ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা। সেই টাকা বৃদ্ধার নয়, ভুল বুঝিয়ে ব্যাঙ্কের শাখায় নিয়ে গিয়ে টিপ নিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আসার সময় ওই তৃণমূল নেতাকেই টাকা তুলে দিতে হবে বলে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
গোটা ঘটনা নিয়ে মল্লিকপাড়া গ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা সাহাজান আলীর বিরুদ্ধে চাঁচল-১ নং ব্লক অফিসে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধা। থানাতেও আবেদন জানিয়েছেন ফাতেমা বেওয়া। ফাতেমা বেওয়ার অভিযোগ, আমার ঘরের টাকা একাউন্টে ঢুকেছিল। ওই টাকা আমার। ভুল বুঝিয়ে গ্রামের তৃণমূল নেতা সাহাজান আলি ও তার স্ত্রী রীনা খাতুন আমাকে ব্যাঙ্কে নিয়ে গিয়ে টিপছাপ নিয়ে সেই টাকা তুলে নেই। আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে ভুল বোঝায় ও হুমকি দেয়।
যদিও ওই তৃণমূল নেতা সাহাজান আলি, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সাংবাদিকরা বারবার প্রশ্ন করলে তিনি একই উত্তর দেন, এটা নাকি বিরোধীদের চক্রান্ত। তবে তিনি নিজেও বিপক্ষকে চিহ্নিত করতে পারেননি। তৃণমূল নেতার এহেন পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সন্দেহ জাগছে স্থানীয়দের মধ্যেও। তবে চাঁচলের মহকুমা কল্লোল রায় জানিয়েছেন,আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করব। অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
এই ঘটনায় তৃণমূল বিজেপির তর্জা চরমে উঠেছে।মালদা জেলা বিজেপি শাখার যুবমোর্চার সহসভাপতি সুমিত সরকার কটাক্ষ করে বলেন,তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত গুলিতে লুঠ চলছে।এখন যে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বৃদ্ধার টাকা আত্মসাত করেছে।এটাকে দুয়ারে লুট বলে।
পাল্টা বক্তব্যে তৃণমূলের মালদা জেলা সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম বলেন,বিজেপির অস্তিত্ব নেই রাজ্যে। দুয়ারে সরকারে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তবে ওই তৃণমূল নেতার এহেন কর্মকান্ড প্রমান হলে দলের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।