বিশ্বভারতীর তরফে শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন খতিয়ে দেখতেই সোমবার দুপুরে সাত সদস্যের ইউনেস্কোর এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল শান্তিনিকেতনে পা রাখেন।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের (world heritage site) তকমা মিলতে পারে শান্তিনিকেতনের। সোমবার শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) পা দিয়েছেন আইসিওএমওএস (International Council on Monuments and Sites)-এর এক প্রতিনিধিদল। ইউনেস্কোর (UNESCO) ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় শান্তিনিকেতনের নাম উঠবে কিনা তা নির্ভর করছে এই প্রতিনিধি দলের মতামতের উপর।
বিশ্বভারতীর তরফে শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন খতিয়ে দেখতেই সোমবার দুপুরে সাত সদস্যের ইউনেস্কোর এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল শান্তিনিকেতনে পা রাখেন। তাঁদের সঙ্গে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের কয়েকজন আধিকারিকও ছিলেন। এই পরিদর্শনের কথা মাথায় রেখেই সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যশালী গৃহ সংরক্ষণ কাজ শুরু করে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ (Archaeological Survey of India)।
আরও পড়ুন- ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, চিকিৎসা চলছে দিল্লিতে
আরও পড়ুন- ‘গোয়া যেন টালিগঞ্জ না হয়ে যায়’, বাবুলকে দায়িত্ব দেওয়ায় কটাক্ষ দিলীপের
উপাসনা গৃহ সংস্কার, ভেঙে পড়া ঘণ্টাতলার পুনর্নিমাণ, নানান খোলা জায়গা রেলিং দিয়ে ঘিরে রাঙিয়ে তোলা ইত্যাদি নানান কাজ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এককথায় বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও তার সংরক্ষণকেই প্রতিনিধিদলের সামনে উপস্থাপিত করার লক্ষ্যেই এই কয়েক মাস মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন দেখার যে শান্তিনিকেতনের ভাগ্যে হেরিটেজ সাইটের তকমা জোটে কিনা।
আরও পড়ুন- বর্ষার বিদায় বেলাতেও কলকাতায় হতে পারে বৃষ্টি, পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের
সকলেরই আক্ষেপ রয়েছে যে ইউনেস্কো দেশের বহু সৌধ বা বস্তুকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি তালিকায় মনোনয়ন দিলেও এখনও ব্রাত্য থেকে গিয়েছে শান্তিনিকেতন। কেন শান্তিনিকেতন এখনও এই তালিকায় প্রবেশ করতে পারেনি তা নিয়ে রয়েছে বহু বিতর্ক। যদিও দেশের প্রথম নোবেলজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মভূমি 'শান্তিনিকেতন আশ্রম'-এর ঐতিহ্য অনেক বেশি। এবার ফের একবার সেই তালিকায় শান্তিনিকেতনের নাম তোলার সুযোগ পেয়েছে বিশ্বভারতী।
ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলের সামনে শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি আদায়ে যথেষ্ট চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। তার জন্য অনেক আগে থেকেই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের নজরদারিতে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য গৃহ, স্থাপত্য, ভাস্কর্যগুলির সংস্কার হয়েছে। এদিন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে। ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা ছাড়াও সেখানে পুরাতত্ত্ব বিভাগের কয়েকজন আধিকারিকও উপস্থিত ছিলেন। এরপর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বিভিন্ন স্থাপত্য ও ঐতিহ্যপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন। বিস্তারিত তথ্য নেন পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিক ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউনেস্কোর এই বিশেষজ্ঞ দল বিশ্বভারতীর ২৩টি ঐতিহ্যপূর্ণ বাড়ি ও স্থাপত্য ঘুরে দেখবেন। এবং তারপর তাঁদের মতামত জানাবেন। শান্তিনিকেতনের ভাগ্যে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা জুটবে কিনা তা সেই মতামতের উপর ভিত্তি করছে।