রাস্তা সারিয়ে দিতে হবে। তা না হলে গ্রামের শিশুরাও পোলিও খাবে না। দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ে প্রতিবাদের অভিনব পন্থা অবলম্বন করলেন বীরভূমের মুরারইয়ের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত প্রশাসন রাস্তা সারানোর আশ্বাস দিলে দুপুরের দিকে ফের পোলিও খাওয়ানো শুরু হয়।
বীরভূমের মুরারই ২ নম্বর ব্লকের চৌতি ভাদিস্টা,বাগিশপুর,গোয়ালকোন্ডা, মহম্মদপুর গ্রামের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। ফলে এক পশলা বৃষ্টি হলেই গ্রামবাসীদের যাতায়াত করতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে রবিবার পোলিও টিকাকরণ বয়কট করে প্রতিবাদের রাস্তায় হাঁটেন গ্রামবাসীরা। ফলে সকাল থেকে ৬১৮ জন শিশুকে পোলিও না খাইয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাস্তা খারাপ হওয়ায় পাইকর থানা বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে গেলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি বড় জলাশয় আছে। অথচ রাস্তার ধারে কোনও পাঁচিল নেই। রাস্তায় আলোও থাকে না। ফলে অন্ধকারে অনেক সময় বর্ষার রাস্তায় গ্রামবাসীরা জলাশয়েও পড়ে যান। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়।
সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে ডুবে যায় পাঁচটি গ্রাম। প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভোটের সময় সব দলের প্রতিনিধিরা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু ভোট ফুরলেই সবাই ভুলে যান। কুশমোড় ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী আব্দুল গনি বলেন, 'গ্রামবাসীদের দাবি ন্যায্য। আমিও বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি। ফলে গ্রামবাসীরা পঞ্চায়েতকে দোষারোপ করছে।' নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা আছে। অনেকটা রাস্তার কাজ হয়েছে। কিছুটা বাকি রয়েছে। দ্রুত সেই কাজ শেষ করা হবে।'
এ দিন পোলিও বয়কটের খবর পেয়ে গ্রামে যান মুরারই ২ নম্বর ব্লকের বিডিও, পাইকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক পাত্র, পাইকর থানার ওসি পূর্ণেন্দু বিকাশ দাস। তাঁরা গ্রামে গিয়ে রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে রাস্তার পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। প্রশাসনের কাছে প্রতিশ্রুতি পেয়ে দুপুরের দিকে পোলিও খাওয়ানো শুরু হয়।