মোট সাতটি ‘নবান্ন অভিযান এক্সপ্রেস’-এর জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হচ্ছে, তার ভাড়া বাবদ রেলকে কত টাকা দেওয়া হচ্ছে তা জানাতে চাননি রাজ্য বিজেপির কোনও নেতাই। ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ কর্মসূচিটির খরচের বহর নিয়ে কটাক্ষ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল।
১৩ সেপ্টেম্বর সারা বাংলার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নবান্ন অভিযানে পথে নামছে বিজেপি। সূত্রের খবর, এই বিশাল কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে মোট সাতটি ট্রেন ভাড়া নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তিনটি এবং দক্ষিণবঙ্গের জন্য রয়েছে চারটি ট্রেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, দিঘা থেকে সাঁতরাগাছি আসার ট্রেন। পদ্ম শিবিরের অন্দরের খবর, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে যাতে বড় সংখ্যায় কর্মী, সমর্থক আনা যায়, সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই ট্রেনের ব্যবস্থা। বিজেপির পক্ষ থেকে বিশেষ ট্রেনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শুভেন্দু এক্সপ্রেস’।
তবে কেবলমাত্র শুভেন্দু অধিকারীই নন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের লোকসভা এলাকা বালুরঘাট থেকেও একটি বিশেষ ট্রেন ছাড়বে। আবার সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষও তাঁর মিছিলের সমর্থকদের জন্য বিশেষ ট্রেন পাচ্ছেন। সেই ট্রেনটি ঝাড়গ্রাম থেকে ছেড়ে মেদিনীপুর হয়ে সাঁতরাগাছি আসবে। এখনও অবদি ঠিক হয়েছে, সোমবার বিকেল ও সন্ধ্যাতেই বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে ‘নবান্ন অভিযান এক্সপ্রেস’ ছাড়বে। ৩টি ট্রেনেই মালদহ থেকে যাতে প্রচুর সংখ্যক কর্মীদের তোলা যায়, সেই ব্যবস্থাও থাকছে। সেগুলি মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছবে। এই ট্রেনে যে যাত্রীরা আসবেন, তাঁরা কলেজ স্ট্রিট থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। সেই মিছিলটির নেতৃত্ব দেবেন দিলীপ ঘোষ।
অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম থেকে এবং দিঘা থেকে আসা ট্রেন দু’টি সাঁতরাগাছি স্টেশনে আসবে। সেই ট্রেনে আগত কর্মীরা সাঁতরাগাছি বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। ওই মিছিলটির নেতৃত্বে থাকবেন শুভেন্দু। আরও দু’টি ট্রেন আসবে পুরুলিয়া এবং রামপুরহাট থেকে ছেড়ে আসবে হাওড়ায়। এই দু’টি ট্রেনে আসা কর্মীরা হাওড়া ময়দান থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। সেই মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন সুকান্ত।
ওই ট্রেন ছাড়াও লোকাল ট্রেনে যাঁরা আসবেন তাঁদের সাঁতরাগাছি, হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনে আসার নির্দেশ বিজেপির পক্ষ থেকে। গোটা পরিকল্পনা সম্পূর্ণ সঠিক পথে চালাতে সোমবার থেকেই কন্ট্রোল রুম খুলছে রাজ্য বিজেপি। হেল্পলাইন নম্বরও দিয়ে দেওয়া হবে কর্মীদের। সোমবার সারারাত এবং মঙ্গলবার কর্মসূচি শেষে, দলের সমর্থকরা প্রত্যেকে নিজের এলাকায় পৌঁছে যাওয়া পর্যন্ত সক্রিয় থাকবে সেই কন্ট্রোল রুম।
রাজ্য বিজেপি সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থক আনার উপরে। এর মধ্যে আবার শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের উপরে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাসেরও ব্যবস্থা করার পরেও তাই শেষ মুহূর্তে দিঘা থেকে একটি ট্রেন ভাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল। রবিবারেই নন্দীগ্রামে সমাবেশ করেছেন শুভেন্দু। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার কর্মীদেরও দিঘা থেকে ট্রেন ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ট্রেনটি ছাড়বে মঙ্গলবার সকালে।
মোট সাতটি ‘নবান্ন অভিযান এক্সপ্রেস’-এর জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হচ্ছে, তার ভাড়া বাবদ রেলকে কত টাকা দেওয়া হচ্ছে তা জানাতে চাননি রাজ্য বিজেপির কোনও নেতাই। ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ কর্মসূচিটির খরচের বহর নিয়ে কটাক্ষ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। এর জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘ট্রেন ভাড়ার জন্য খরচ হচ্ছে এটা তো ঠিক। আর সেটা হচ্ছে দলের নীতি মেনেই। অন্য দলের কর্মীরা বিনা ভাড়ায় বৈধ যাত্রীদের উপর অত্যাচার করে আসেন। আমরা সেই সংস্কৃতির বদল চাইছি। সেই কারণেই ট্রেন ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের ক্ষতি করে কোনও কাজ করতে চায় না বিজেপি।’’
শান্তিনিকেতনে ছাতিমতলার চরম দুর্দশা, লণ্ডভণ্ড হওয়ার ছবি দেখে শিউরে উঠছেন বঙ্গবাসী
বিমানবন্দরে বাধার মুখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা, ব্যাংকক যাওয়া আটকে দিল ইডি
দুর্দান্ত রণনীতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে বিজেপি, ১৩ সেপ্টেম্বর কোন পথে হবে নবান্ন অভিযান?