- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- শান্তিনিকেতনে ছাতিমতলার চরম দুর্দশা, লণ্ডভণ্ড হওয়ার ছবি দেখে শিউরে উঠছেন বঙ্গবাসী
শান্তিনিকেতনে ছাতিমতলার চরম দুর্দশা, লণ্ডভণ্ড হওয়ার ছবি দেখে শিউরে উঠছেন বঙ্গবাসী
- FB
- TW
- Linkdin
কথিত আছে, ১৮৬৩ সালের ১ মার্চ ভুবনডাঙার পুকুর-সহ বছরে ৫ টাকা খাজনার বিনিময়ে ২০ বিঘা জমির মৌরসীপাট্টা নেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠার পরে এই ছাতিমতলাতেই উপাসনা করতেন তিনি।
অর্থাৎ, শান্তিনিকেতন আশ্রম ও বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার সূত্র বাঁধা এই ছাতিমতলা থেকেই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন সময় এখানে উপাসনা, বৈদিক মন্ত্রপাঠ ও বিশ্বভারতীর নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন ৷
নিম্নচাপের জেরে শনিবার থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে বীরভূম সহ বাংলার বিভিন্ন জেলায়। ঝোড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে লন্ডভন্ড অবস্থা । বৃষ্টির জেরে ভেঙে পড়ল শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য়বাহী ছাতিমতলা ।
প্রচণ্ড বৃষ্টির তোড়ে আর তীব্র গতিতে হাওয়ার দাপটে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলা ভেঙে ছত্রখান। দুটি শাল গাছের ডাল ভেঙে 'প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি' লেখা বেদিটি সম্পূর্ণ ভেঙে যায়৷
এর আগে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাচীন বটবৃক্ষ উপড়ে গিয়ে ভেঙে গিয়েছিল বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী ঘণ্টাতলা ৷ এবার প্রকৃতির কোপ পড়ল ছাতিমতলায়।
১৯৪১ সালের ৭ অগাস্ট প্রয়াত হয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কলকাতায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এই ছাতিমতলাতেই রয়েছে গুরুদেবের অসংখ্য় স্মৃতি।
এখানে রাখা রয়েছে গুরুদেবের অস্থিও। পৌষমেলার থেকে শুরু করে ২৫ বৈশাখ, ২২ শ্রাবণ দিনগুলিতে এখানেই বিশেষ উপাসনা হয়।
জানা গিয়েছে, ভেঙে পড়া ছাতিমতলার সংস্কার করবে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ। আপাতত ছাতিমতলার চারপাশ সবুজ কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
এর আগেও বহু দুর্ঘটনায় পড়ে বেশ কয়েকবার নষ্ট হয়েছে শান্তিনিকেতনের বহুমূল্যবান ঐতিহ্য। কিন্তু শনিবার সকালে যা ঘটল, বাংলার মানুষের কাছে তা কল্পনাতীত!
জানা গিয়েছে, শাল গাছের আঘাতে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী বেদির মার্বেলের আসনটি। গাছের তলায় চাপা পড়ে গেছে ফলক, যেখানে লেখা ছিল, 'তিনি আমার প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি'।
ছাতিমতলার ভেঙে পড়া নিয়ে সঠিক পরিচর্যার অভাবকে দোষ দিচ্ছেন অনেকেই। ঠিক কী কারণে বিশাল শালগাছ দু’টি ভেঙে পড়ল? বিশ্বভারতীর উদ্যান বিভাগের কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, গাছ দু’টি বহু পুরনো হয়ে যাওয়ার ফলে গাছের উপরের অংশ ভেঙে পড়েছে।
বিশ্বভারতীর তরফে জানানো হয়েছে, মূল সৌধ যাতে খুব তাড়াতাড়ি পুনর্নির্মাণ করা যায় সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের (এএসআই) সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে।