
Birbhum School Student Death News: নাবালিকা ছাত্রীকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার স্কুলের শিক্ষক। বীরভূমের রামপুরহাটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বারোমেশিয়া শ্যাম পাহাড়ী শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ স্কুলের ১৩ বছরের ছাত্রী বাহা কিসকুর বস্তাবন্দি দেহ টুকরো টুকরো অবস্থায় উদ্ধার পুলিশের। ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকায় ক্ষোভের আবহ। পরিবার থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষজন অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ অগাস্ট সকালে রামপুরহাট আসার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় বাহা। বাড়ির লোকেরা চারদিক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে খুঁজে পাননি। শেষ পর্যন্ত রামপুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। প্রায় তিন সপ্তাহের অনুসন্ধানের পর অবশেষে মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্যকর মোড় নেয় তদন্তে।
রামপুরহাট থানার কালিডাঙ্গা সংলগ্ন একটি ব্রিজের নীচে থেকে উদ্ধার হয় বস্তাবন্দি অবস্থায় পাঁচ টুকরো দেহ। প্রাথমিকভাবে দেহটি বাহা কিসকুর বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা, নৃশংসভাবে খুন করার পর প্রমাণ লোপাট করতে দেহ টুকরো করে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, বাহাকে খুন করেছে তারই স্কুলের শিক্ষক মনোজ পাল। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য জানতে চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বাহার বাবা কালীদাস কিসকু, যিনি পেশায় ডাক্তার, সংবাদমাধ্যমকে জানান— “আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। আমি চাই ওই শিক্ষকের ফাঁসি হোক। অন্যথায় এই ধরনের অপরাধ আরও বাড়বে।” শোকে ভেঙে পড়া পরিবার ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছে।
এলাকায় নেমে এসেছে চরম ক্ষোভ। বহু মানুষ বলেছেন, একজন শিক্ষক যিনি সমাজে আদর্শ গড়ার দায়িত্ব পালন করেন, তার হাতে এভাবে ছাত্রীর মৃত্যু অকল্পনীয়। স্থানীয়রা অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
রামপুরহাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, খুনের মামলায় অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হবে। পাশাপাশি দেহ উদ্ধারের পর থেকে তদন্ত আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, হত্যার পিছনে যদি আরও কেউ যুক্ত থাকে, তবে তাদেরও চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার রেশে বীরভূম জুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। একদিকে কিশোরী কন্যার অকাল মৃত্যু, অন্যদিকে তারই শিক্ষক খুনে অভিযুক্ত— এই দ্বিগুণ ট্র্যাজেডি তীব্র আলোড়ন তুলেছে সর্বস্তরে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।