বীরভূমে বিজেপির অভিনব প্রচার কর্মসূচি। জেলবন্দি তৃণমূল নেতাদের নামে স্লোগান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের।
'চোরকে চোর বলতে শিখুন'- যারা কয়লা, গরু, চাকরি নিয়ে দুর্নীতি করেছে, তারা ভুল নয়- চুরি করেছে। ভুল বলে তাদের পাপকে লঘু না করে না। 'চোর' বলার সৎ সাহস রাখুন"। এই কঠিন ভাষাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের ঠিকানায় চিঠি পাঠালো বিজেপির বীরভূম জেলা যুব মোর্চা। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিবেককে জাগ্রত করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে চিঠিতে।
শনিবার এমনি অভিনব পদ্ধতিতে পোস্টকার্ড চিঠি পাঠানো হল হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটের ঠিকানায়। এদিন বেলার দিকে বিজেপির যুব মোর্চার নেতা কর্মীরা জমায়েত হন সিউড়ির দলীয় অফিসে। সেখানেই শতাধিক ছাপানো পোস্টকার্ড তুলে দেওয়া হয় কর্মী সমর্থকদের হাতে। পোস্টকার্ড হাতে মিছিল করে সিউড়ি প্রধান ডাক ঘরে হাজির হন মোর্চার কর্মী সমর্থকেরা। সেখানে ডাক বক্সে একে একে পোস্টকার্ড জমা দেন তারা। এই অভিনব উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা। তিনি বলেন, 'রাজ্যে বলি, পাথর, কয়লা থেকে চাকরি চুরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী চোরদের সমর্থন করে চুরিকে ভুল বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই আমরা ঈশ্বরের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বিবেক জাগ্রত করার প্রথম করে চিঠি পাঠালাম। আমাদের দাবি অবিলম্বে আন্দোলনকারী যোগ্য ছেলেমেয়েদের চাকরি দিতে হবে'। এছাড়াও বিজেপির পক্ষ থেকে একটি মিছিল করা হয়েছে। যেখানে তৃণমূলের জেলবন্দি নেতাদের নাম তুলে চোর স্লোগানও দেওয়া হয়।
বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে গরুপাচার - কাণ্ডে জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আয়ের উৎস নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল শুধু নয়। তাঁর মেয়েও রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে। অনুব্রতকে এই রাজ্যে রেখে জেরার পাশাপাশি দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরার প্রস্তুতিও নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। আর যদি তা সম্ভব হয় তাহলে তা যে অনুব্রতর ওপর চাপ আরও বাড়াতে তা বলাই বাহুল্য।
এই অবস্থায় ক্রমশই প্রকট হচ্ছে তৃণমূল দলীয় কোন্দল। মাথা তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। ধীরে ধীরে শক্তি বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। দলীয় কর্মসূচি নিতে পাচ্ছে। আগামী বছর এই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। অনুব্রতর জেলবন্দি অবস্থায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম একাধিকবার বীরভূম গিয়েছেন। দলের অন্যান্য নেতা ও মন্ত্রীরাও বীরভূম যাচ্ছেন। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের অভাব যে তারা পুরণ করতে পারবেন না - তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। বীরভূম - তৃণমূলের
একটি গড় হিসেবেই পরিচিত রাজ্য রাজনীতি। তাই এই অবস্থায় বিজেপির মতই এই জেলায় মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে সিপিএমও। লাল পার্টির পক্ষ থেকেও একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
অ্যারেস্ট ওয়ারেন্টে সই করেননি অনুব্রত মণ্ডল, দিল্লিতে নিয়ে যেতে কালঘাম ছুটছে ইডির