সংক্ষিপ্ত
শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের তদন্তে মিসিং লিঙ্কের সন্ধানে তিন রাজ্যে সফর করছে দিল্লি পুলিশ। শ্রদ্ধার বাকি দেহাংশের সন্ধানে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছে আফতাবকে নিয়ে। রহস্যের কিনারা করতে তৎপর দিল্লি পুলিশ।
আফতাব আমিন পুনাওয়ালার পুলিশ হেফাজতের পাঁচ দিন বাড়িয়েছিল দিল্লির আদালত। হেফাজতের প্রথম দিন অর্থাৎ শুক্রবার দিল্লি পুলিশ গুরুগ্রামের বেশ কয়েকটি জায়গায় নিয়ে যায়। আর সেখান থেকেই দিল্লি পুলিশ নিহত স্রদ্ধা ওয়াকারের দেহের কয়েকটি অংশের সন্ধান পেয়েছে। শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করেছে বলে পুলিশের জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে আফতাব, আর সেই অনুযায়ী মৃতার দেহের কিছু অংশের সন্ধান এখনও পায়নি পুলিশ। সেই দেহাংশের সন্ধানে আফতাবকে নিয়ে একাধিক এলাকায় ঘুরছে দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর শুক্রবারের মত শনিবারও আফতাবকে নিয়ে শ্রদ্ধার দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চালাবে দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর আততায়ীকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে দক্ষিণ দিল্লির একটি জঙ্গলে।
শুক্রবার গুরুগ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাংশ ইতিমধ্যেই পাঠান হয়েছে ফরেনসিক তদন্তের জন্য। নিহতের মুণ্ডের সন্ধান অব্যাহত রয়েছে। তবে দিল্লি থেকে একটি কাটা মুণ্ড উদ্ধার হয়েছিল, যেটি শ্রদ্ধার কিনা জানার চেষ্টা চলছে। তবে আফতাব জানিয়েছে শ্রদ্ধার কাটা মাথা প্রমাণ লোপাটের জন্য পুড়িয়ে আর ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে সে। কিন্তু সেই কাটা মাথা কোথায় রয়েয়েছ তার সন্ধানে চলছে তল্লাশি।
শ্রদ্ধা হত্যার কিছু মিসিং লিঙ্ক রয়েছে। আর যেগুলি নিয়ে রীতিমত ধ্বন্দে পুলিশ। মিসিং লিঙ্কের সন্ধানে দিল্লি পুলিশ উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র আর হরিয়ানা গেছে। এই সব এলাকায় শ্রদ্ধা আর আফতাব দুজনেই গিয়েছিল। তবে এই তিনটি জায়গার সঙ্গে প্রেমিক যুগলের কী সম্পর্ক ছিল তাও এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তথ্যের সন্ধানেই দিল্লি পুলিশ এই তিন রাজ্যে গেছে।
অন্যদিকে এপর্যন্ত পাওয়া দেহাংশ শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে হাড়ের ডিএনএ টেস্ট করার জন্য শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে শ্রদ্ধার পরনের জামাকাপড়ের কোনও সন্ধান পায়নি দিল্লি পুলিশ। যা প্রশাসনকে রীতিমত উদ্বেগে ফেলেছিল। তবে আফতাপ জানিয়েছে শ্রদ্ধার মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন পরেই সে শ্রদ্ধার জামাকাপড় পুরসভার একটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিল। যেটি পুরসভার একটি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই এই গাড়িটিকে সনাক্ত করেছে। শ্রদ্ধার জামাকাপড়ের খোঁজেও চলছে তল্লাশি।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, আফতাব শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। কিন্তু খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করেছিল। তা রাখার জন্য একটি ফ্রিজারও কিনেছিল। তবে শ্রদ্ধার দেহ কাটার সময় রক্তপাত হয়। সেই রক্তের দাগ পরিষ্কার করা আর প্রমান নিশ্চিহ্ন করার জন্য রাসায়নিক সম্পর্কে জানতে চেয়ে গুগল সার্চ করেছিল। দিল্লি পুলিশ আরও বলেছিল খুনের পর ঠান্ডা মাথায় সবকিছু পরিকল্পনা করেছিল। শ্রদ্ধাকে খুনের পর লাশ বাথরুমে রেখে দিয়েছিল। তারপর দোকানে গিয়ে ফ্রিজ কিনে এনেছিল। তারপকই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটেছিল।
শ্রদ্ধার শেষ অবস্থান জানতে দিল্লি পুলিশ তার মোবাইল লোকেশনও ট্র্যাক করে। জানতে পারে দিল্লিতেই ছিল ১৮ মে পর্যন্ত। তারপর আর শ্রদ্ধার কোনও সন্ধান পায়নি। সবকিছু দেখেই ১০ নভেম্বর দিল্লি পুলিশ এফআইর করে। তারপরই গ্রেফতার করে আফতাবকে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মুম্বইয়ের ডেটিং অ্যাপে প্রথম পরিচয়। তারপর প্রেম। পরিবারের অমতে দুজনেই চলে আসে দিল্লি। কিন্তু বিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়। তারপরই শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব।
আরও পড়ুনঃ
'খুনি প্রেমিক' আফতাবের নার্কো টেস্টের অনুমতি আদালতের, বাড়ানো হল পুলিশ হেফাজতের দিন
শ্রদ্ধাকে নিথর শরীরের পাশে বসে রাতভোর গাঁজা খেয়েছিল আফতাব, জেরায় কবুল হত্যাকারীর
শ্রদ্ধার 'খুনি প্রেমিক' আফতাবের নার্কো টেস্ট হবে, জানুন কী এই কঠিন পরীক্ষা