আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অভিযোগ জানালেও বারবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন নয়া রাজ্যপাল, ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপি

Published : Dec 27, 2022, 03:01 PM IST
tmc bjp

সংক্ষিপ্ত

তৃণমূল কটাক্ষ করে বলেছে, রাজভবনকে দলীয় দফতরে পরিণত করাই বিজেপির অভ্যাস! এখন সেটা করা যাচ্ছে না বলেই তাদের রাগ হচ্ছে! 

নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভূমিকায় যে প্রথম থেকেই অসন্তুষ্ট ছিল বঙ্গ বিজেপি, তা আরও স্পষ্ট হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে। বিজেপির আর এক বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সম্পর্কে বিরোধী দল বারবার যে অভিযোগ তুলছে, নতুন রাজ্যপাল তার প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে বারবার মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের প্রশংসা করছেন। রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা যে পরিপন্থী হচ্ছে না, শুভেন্দু অধিকারী সেই ক্ষোভের কথা আগেই প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এ বার তাঁদের সেই মনোভাব আবার প্রকাশ্যে চলে এল। এর ফলে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছে, রাজভবনকে দলীয় দফতরে পরিণত করাই বিজেপির অভ্যাস! এখন সেটা করা যাচ্ছে না বলেই তাদের রাগ হচ্ছে!

শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ জানাতে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তখন বিরোধী দলনেতা স্পষ্টই বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যপালের এখানে কিছু করার আছে বলে আমার মনে হয় না।’’ বরং কেন্দ্রীয় সংস্থা আর আদালতের ওপরেই ভরসা রেখেছেন শুভেন্দু। এগরার বালিঘাইতে রবিবার দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেখানেই ওই বিস্ফোরণ নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এটা এনআইএ তদন্তের জন্য উপযুক্ত। হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। সন্ত্রাস কবলিত এলাকার মানুষ সুবিচার পাবেন বলে আদালতের উপরে আমার আস্থা রয়েছে এবং এটা হবেই।’’

চলতি বছরের ২ ডিসেম্বর ভগবানপুর ব্লকের অর্জুননগর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নাড়ুয়াভিলা গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণে হয়ে সম্পূর্ণ গ্রাম কেঁপে ওঠে। রাজকুমার এবং তাঁর ভাই সহ মৃত্যু হয় তিন জনের। ঘটনার তিন সপ্তাহ পরেও পুলিশি তদন্তে ঘাটতি রয়েছে, এই অভিযোগ নিয়েই গত ২৩ ডিসেম্বর রাজভবনে গিয়েছিলেন ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি এবং ছবি রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন তিনি। তার দু’দিনের মধ্যে বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালের উপরে কার্যত ‘অনাস্থা’ প্রকাশের পরে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথও সোমবার বলেছেন, ‘‘গোড়া থেকে বর্তমান রাজ্যপাল যে ভাবে শাসক দল এবং রাজ্য সরকারকে প্রশংসায় ভরিয়ে তুলছেন, তাতে হয়তো বিরোধী দলনেতা বিরক্ত। আমরাও দেখছি, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কী, আর সেখানে রাজ্যপাল কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন। উনি আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। বরং, তৃণমূলের দিকেই ছুটছেন!’’

তবে, বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত চেয়ে সরাসরি রাজ্যপালের কাছে কেন গিয়েছে বিরোধী দল? এ বিষয়ে বিজেপি বিধায়কের জবাব, ‘‘রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল। তাই এলাকায় সন্ত্রাসের বিহিত চেয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। যাবতীয় নথিও দিয়ে এসেছি।’’

জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন প্রায় নিয়মিত রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতেন। নয়া রাজ্যপালকে নিয়ে বিজেপির ক্ষোভ সম্পর্কে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি শাখা সংগঠন মানে বোঝে ইডি-সিবিআই আর দলের দফতর বলতে বোঝে রাজভবন! সেই হিসেব গোলমাল হলেই মাথা খারাপ হয়ে যায়! রাজ্যপাল হিসেবে ওরা ধনখড়কে দেখেছে, যিনি সকাল থেকে নানা সমালোচনা করতেন! সেটাই তো শেষ কথা নয়। সংসদীয় গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো কোনও কিছুতেই আস্থা নেই বিজেপির।’’ রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা যে ভাবে চালাতে চাইছিলেন, হয়তো সে কথা শোনেননি রাজ্যপাল। তাই এ ধরনের মন্তব্য করছেন! আর আপাতত কেন্দ্রীয় সংস্থা-নির্ভর রাজনীতি করতে চাইছেন।’’


আরও পড়ুন-
মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ, প্রতিবাদ করায় বিএসএফ জওয়ানকে পিটিয়ে খুন মোদীর রাজ্যে, গ্রেফতার ৭
জানুয়ারি মাসেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে কোভিড, চিন নিয়ে আশঙ্কায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি, আলোচনায় রইল শান্তির বার্তা

PREV
click me!

Recommended Stories

১ বছর পরে ২ দিনের সফরে কোচবিহার যাচ্ছেন মমতা, রইল সোম ও মঙ্গলের ঠাসা কর্মসূচি
Dilip Ghosh: বাংলায় ‘বাবরি মসজিদ’! বিজেপির দিলীপ হুমায়ুনকে দিলেন চরম উপদেশ