সংক্ষিপ্ত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি২০ সম্মেলনে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়’। ইউক্রেনও যে শান্তিরই পরিপন্থী, সেকথা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন সে দেশের রাষ্ট্রনেতা। 

জি২০ গোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে আগেই ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত সম্মেলনে শান্তির বার্তা দিয়ে সারা বিশ্বের তাবড় নেতাদের কাছে প্রভূত প্রশংসিত হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার সেই গুরুদায়িত্বে তাঁর সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা জানালেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রনেতা ভলোদিমির জ়েলেনস্কি।

সারা বিশ্ব যখন বড়দিনের আলোকে উজ্জ্বল, ইউক্রেন তখন প্রতিবেশী শত্রুদেশ রাশিয়ার গ্রেনেড হামলার ভয়ে তটস্থ। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের বলি হয়েছেন হাজার হাজার ইউক্রেনবাসী। ছোট্ট শান্ত দেশটা এখন রুশ ধ্বংসলীলার মরণস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেশের সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাধারণ নাগরিকদেরও হাতে তুলে নিতে হয়েছে মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেন যে শান্তিরই পরিপন্থী, সেকথা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন সে দেশের রাষ্ট্রনেতা।

সোমবার, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন জ়েলেনস্কি। টুইট করে জ়েলেনস্কি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। জি২০ সভাপতিত্ব সফল হোক কামনা করেছি। এই প্ল্যাটফর্মে আমি শান্তির সূত্র দিয়েছিলাম। এখন আমি সেই সূত্রের বাস্তবায়নের জন্য ভারতের অংশ নেওয়ার প্রতীক্ষা করছি।” একই সঙ্গে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, “আমি জাতিসংঘের থেকে প্রাপ্ত মানবিক সাহায্য ও সমর্থনের জন্যও ধন্যবাদ জানাই।”


 

গত ১ ডিসেম্বর সরকারিভাবে জি২০ গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত দেশগুলির সভপতিত্ব গ্রহণ করেছে ভারত। সেহেতু, দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ক্ষেত্রে জ়েলেন্সকির এই টুইট বার্তা বেশ প্রাসঙ্গিক বলে মনে করছে গোটা বিশ্ব। কারণ, রাশিয়া এবং ইউক্রেন, দুই দেশের সঙ্গেই প্রথম থেকে সুসম্পর্কের সমতা বজায় রেখে এগিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সারা বিশ্বের বহু দেশ শান্তি বিঘ্নিত করার কারণে রাশিয়ার বিপক্ষে মতামত দিলেও, এর পাশাপাশি আবার অন্যান্য বহু দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিলেও ভারত কোনওক্রমেই রাশিয়ার বিপক্ষে বা যুদ্ধের পক্ষে, উভয় ক্ষেত্রেই ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত জি২০ গোষ্ঠীর সম্মেলনে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়’। অর্থাৎ, তাঁর সমর্থন বরাবরই গেছে সমঝোতা, বোঝাপড়া ও শান্তি বজায় রেখে পারস্পরিক মেলবন্ধনের দিকে।


 

যদিও, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর দেশ যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি। তবে তাঁর 'বিপক্ষ' শিবির অর্থাৎ, ইউক্রেন সেই আলোচনায় আসতে চাইছে না। অন্যদিকে, ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দাবি, তিনি সর্বোতভাবে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন কলে আলোচনা হওয়ার পর যদি বিশ্বের এই প্রবল ক্ষমতাধারী এবং তার অপরদিকে তথাকথিত দুর্বল দেশটির মধ্যে তিক্ত সম্পর্কের উন্নতি ঘটে, তাহলে তা হবে গোটা বিশ্বের কাছে এক অনন্য নজির।


আরও পড়ুন-
‘ধারাল অস্ত্র রাখুন’, ‘সন্তানকে মিশনারি স্কুলে পাঠাবেন না’ হিন্দুত্ববাদী মঞ্চ থেকে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি সাংসদের
অস্ট্রেলিয়া থেকে কলকাতায় আসা বিদেশিনী কোভিড পজিটিভ, বিহারে ৪ তীর্থযাত্রীর দেহে মিলল করোনাভাইরাস
কোভিড আতঙ্কের মধ্যেই কলকাতায় বয়ে গেল বড়দিনের জনসমুদ্র, মাস্কবিহীন ভিড় কি গুরুতর আশঙ্কার কারণ?