সম্প্রতি হুগলির কোন্নগরের বড় বহেরা মাঠে এসএফআইয়ের সভায় উপস্থিত থেকে সুকন্যা সম্পর্কে কার্যত কিছুটা নরম হতেই দেখা গেল বিমান বসুকে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর পাশের সেলেই বন্দি রয়েছেন তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও। সুকন্যাকে বন্দি করা নিয়ে সহানুভূতির বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তারপর একই সুরে কথা বলেছিলেন কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। সেই সুর শাসকদল তৃণমূলের অন্দর ছেড়ে এবার শোনা গেল বর্ষীয়ান বাম নেতার কথাতেও। সম্প্রতি হুগলির কোন্নগরের বড় বহেরা মাঠে এসএফআইয়ের সভায় উপস্থিত থেকে সুকন্যা সম্পর্কে কার্যত কিছুটা নরম হতেই দেখা গেল বিমান বসুকে।
সুকন্যার গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বাম নেতার বক্তব্য, ‘বর্তমান প্রজন্মকে কলুষিত করার জন্য যাঁরাই আছেন, আমি তাঁদের বিরুদ্ধে। তাই আমি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তিনি হয়তো কয়লা পাচার বা গরু পাচারে হাত পাকিয়েছেন। কিন্তু তাঁর মেয়ে তো করেননি।’ বিমানের দাবি, যাঁরা রাজনীতি করেন তাঁদের কাজ কি খারাপ কাজ শেখানো? বাড়িতে বসে নিজের মেয়েকে খারাপ কিছু শিখিয়েছেন? তাঁকে যখন জিজ্ঞাসা করা হত, তখন তিনি বলতেন আমার বাবা সব জানেন। আর জানেন, হিসাব রক্ষক। বোধহয় সবটা মিথ্যা নয়। কিছু জিনিস হয়তো তিনি জানতেন। কিন্তু সব জিনিস যে জানতেন, সেটা নাও হতে পারে।
মেয়ের গ্রেফতারিতে যে অনুব্রত মণ্ডল একেবারেই খুশি হননি সেটা তাঁর কথা শুনেই বোঝা গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, মেয়েকে গ্রেফতারি করটা মোটেই কোনও বাহাদুরির কাজ হয়নি। এই প্রসঙ্গে বিমান বসু বলেন, ‘বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত বোলপুরে মাছ কাটত। বড় বড় মাছ কাটত। খুব ভালো কাটতে পারত। এত সম্পত্তি হলে সে মাছ কাটে না। অনুব্রত নিজেই বলছেন এটা কি সিবিআইয়ের বাহাদুরি হল? গত কয়েকবছর ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত উনি। এবং তিনি এই প্রজন্মের কন্যা। কিন্তু তাকে খারাপ পথে নিয়ে গেল কে? বীরভূমের জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যিনি সুকন্যার বাবা।’
এর আগে অনুব্রত কন্যার সুকন্যার মানসিক অবস্থা নিয়ে সহানুভূতি প্রদর্শন করেছিলেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। এরপর অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কে কী বলল, তার উপর আমি মন্তব্য করব না। তবে বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে। পূর্ণ আস্থা রাখি।’
অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন ফিরহাদ হাকিম, সংবাদমাধ্যমের সামনে কী বললেন তিনি?
রাজ্যে যখন তাঁর পক্ষে অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতারা রয়েছে, তখন দিল্লির তিহাড় জেলে কেঁদে ভাসাচ্ছেন সুকন্যা মণ্ডল। আইনজীবীর কাছেও বার বার বাবার কথা জিজ্ঞেস করছেন তিনি। সূত্রের খবর, আইনজীবী অমিত কুমারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও বার বার ভেঙে পড়ছেন সুকন্যা। ইডি হেফাজতে থাকাকালীন মন ভালো রাখার জন্য আইনজীবীর থেকে দুটি বই চেয়েছিলেন অনুব্রত-কন্যা। মা সারদা বিষয়ক ‘শ্রী শ্রী মায়ের কথা’ এবং স্বামী বিবেকানন্দের পত্রাবলী বই দুটি পড়ে নিজের মন ভালো রাখতে চান তিনি। সেই মতো জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাঁর আইনজীবী এই দুটি বই সুকন্যার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন-
বজরং দল, ইসলামিক সংগঠন সহ সমস্ত ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টিকারী দলকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের
অনুব্রত-সুকন্যা বন্দি থাকাকালীনই রক্তাক্ত তিহাড় জেল, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুন গ্যাংস্টার, কে এই তিলু তাজপুরিয়া?
'মা কালী'-র স্কার্ট ওড়ানো ছবি সরিয়ে ফেলে ক্ষমা চাইল ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রক, টুইটারে হিন্দু ধর্মকে সম্মান জ্ঞাপন