
বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, “যারা লুটে খাচ্ছে, তারা লুটের বাজার বড় করতে চাইছে। শ্রমজীবী মানুষের ক্ষতি করছে মোদী-মমতার সরকার। নিয়োগ বন্ধ, নতুন কলকারখানা হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আসলে ন্যাকামো করছেন। ছাত্র-যুবরা রাস্তায় নামছে ইনসাফ চাইতে। আরজি করে একজন ডাক্তারকে খুন করে ফেলা হল। কিন্তু রাজ্য পাল্টাচ্ছে। মানুষ নিজেদের হক বুঝে নিতে সোচ্চার হচ্ছে।"
সেলিম আরও যোগ করেন, "আমাদের ব্রিগেড ডাকলেই হামলা শুরু করে দেয় তৃণমূল। কিন্তু মনে রাখবেন, এখন আর সেই অবস্থা নেই। দিন পাল্টাচ্ছে। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, কারও মুরোদ নেই লাল ঝাণ্ডার গায়ে হাত তুলবে। কারণ, এটা ২০২৫ সাল। আর পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভাঙতে এলে থানায় থানায় এফআইআর হবে। সময় এসে গেছে, আমাদের ঝাণ্ডার ডাণ্ডাগুলোকে শক্ত করতে হবে কমরেড। দেশ বাঁচাতে হলে লাল ঝাণ্ডাকে মজবুত করতে হবে। আর কারা দাঙ্গা তৈরি করল? ব্লু-প্রিন্ট কাদের তৈরি? বিচারবিভাগীয় তদন্ত চাই। নাহলে আমরাই বুঝিয়ে দেবো।"
মোট ৬জন বক্তা ছিলেন। সারা ভারত কৃষকসভার পক্ষে অমল হালদার, ক্ষেতমজুর সংগঠনের তরফে নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, বস্তি উন্নয়ন সমিতির থেকে সুখরঞ্জন দে, সিআইটিইউ-র পক্ষ থেকে অনাদি সাহু এবং সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সাংস্কৃতিক কর্মসূচি দিয়ে শুরু হয় ব্রিগেড (CPM Brigade Highlights)।
জমজমাটভাবেই শুরু বামেদের ব্রিগেড।
মঞ্চে শুরু থেকেই ছিলেন মহম্মদ সেলিম (MD Salim)।
তিনি বলেন, " যারা শহরে থাকেন, তারা অনেকেই আমাদের কথা জানেন না। আমরা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব। আসলে মানুষের রুটিরুজি আর ভোটবাক্স দুটো আলাদা। আমরা ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করতে চাই। হয় টাকা দাও, নাহলে কাজ দাও। ওসব চলবে না। আমরা আসলে আপনাদের জন্যই লড়ছি। আজ মা-বোনেরা ব্রিগেডে এসেছে। তৃণমূল এত চুরি করেছে যে, দিদি ঠিক কী বলবেন নিজেই বুঝতে পারছেন না। ওরা তো বলছেন খেলা হবে! আমরা বলছি, খেলব আমরাও। ছাব্বিশে আমরাও উইকেট ফেলব।’’
বাবার সাইকেলের পিছনে বসেই ব্রিগেডের পথে সে। অপরদিকে, ব্রিগেডের মাঠে দুই প্রবীণ বাম সমর্থক।
তখন আসতে আসতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু তিনি উপস্থিত হয়ে যান অনেক আগেই।
ওদিকে শিয়ালদহ স্টেশনে ব্যাপক জমায়েত ছিল সিপিএম (CPM) কর্মীদের।
নিরাপদবাবুর কথায়, “অনেকের ঘুম উড়ে যাবে এই ব্রিগেড দেখে। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব। পড়াশোনা করে এই সময়ের ছাত্র-যুবরা পরিযায়ী শ্রমিক হতে রীতিমতো বাধ্য হচ্ছেন। দেশের লোকসভাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কোনও আলোচনা হয় না। বিধানসভাতেও একই অবস্থা। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে আছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুরি করেছেন। আমরা বলছি, ১০০ দিনের নয়! ২০০ দিনের কাজ দিন।"
তাঁর কথায়, ‘‘আজ দিকে দিকে বিপন্ন শ্রমজীবী মানুষ। কয়লাখনি, চা বাগান, ইস্পাত কারখানা এবং চটকলের মানুষ আজ আক্রান্ত হচ্ছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত, স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিবাদী একটা সরকার গত ১৪ বছর ধরে গোটা রাজ্য জুড়ে লুটের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের রাজ্যে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গেছে এবং ৩২ হাজারের চাকরি ঝুলে রয়েছে। এদিকে ছাত্র-যুবরা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। ভাবতে পারছেন? পুরো রাজ্যের অগ্রগতি একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেছে।"
ট্রেনে করে ব্রিগেডের পথে রওনা দেন মহিলা সমর্থকরাও (CPM Brigade Rally Update)।
কাতারে কাতারে সমর্থক আসতে থাকেন ট্রেনে এবং বাসে করে।
তাদের জন্য শিয়ালদহ স্টেশনে বিশেষ ক্যাম্পেরও ব্যবস্থা করা হয় (CPM Brigade Rally News)।
তবে তার অনেক আগে থেকেই ব্রিগেডে ভিড় জমাতে শুরু করে দেন লাল ঝাণ্ডার কর্মীরা।
সেখান থেকে সকাল সকাল রওনা দেন অনেকেই (CPM Brigade Rally Live Update)।
স্লোগান এবং গান শুরু হয়ে যায় ব্রিগেড ময়দানেই।
ব্রিগেডে বাড়তে থাকে উত্তাপ (CPM News)। কার্যত, গরমকে উপেক্ষা করেই নেতৃত্বরা কী বার্তা দেন, তা শুনতে উপস্থিত হন সিপিএম কর্মীরা।
গন্তব্য ব্রিগেড ময়দান। মিছিলের একেবারে অগ্রভাগে দেখা গেল বামপন্থী আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে।
সঙ্গে হল আদিবাসী নৃত্য। সঙ্গে অবশ্য গিটার বাজিয়েও আধুনিক সময়ের গানও উঠে এল।
হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার বাম কর্মী এবং সমর্থকরা (CPM Brigade Rally Live)।
তিনি বলেন, ‘‘আজ রীতিমতো বিপন্ন কৃষকরা। গোপনে জমি বন্ধক দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ফসলের সঠিক দাম কেউ পাচ্ছেন না। আমাদের রাজ্যে কৃষির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আর এদিকে অযোগ্যদের বাঁচানোর জন্য যোগ্যদের বলি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এদিকে দেখুন, চালের দাম বেড়েই চলেছে। আমরা ভাত খেতে পারব?"
তাঁর কথায়, “শহরের বস্তিবাসীরা আগামীদিনে এই শহরে আদৌ থাকতে পারবেন কি না, তা এখন অনিশ্চিত। বস্তিবাসীদের পাট্টা দিতে হবে রাজ্যের সরকারকে। এখন আবার বস্তিবাসীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানোর চেষ্টাও চলছে। কিন্তু আমরা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব।"
আর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কি মহড়া সেরে ফেললেন বাম নেতৃত্ব?
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।