বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার ধর্মঘটের ডাক দিলেন তাঁরা। আগামী নয় মার্চ ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে।
ডিএ-এর দাবিতে অনড় সরকারী কর্মীরা। ইতিমধ্যেই কর্মবিরতি ডাক দিয়েছিল তাঁরা। সরকারি কর্মীদের এই দু'দিনের কর্মবিরতির বিরোধিতায় নবান্নের তরফেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়। এমনকী এই দুই দিন কাজে না আসলে সেক্ষেত্রে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শো-কজ করা হবে বলেও জানানো হয় নবান্নের পক্ষ থেকে। তবে এত কিছুর পরেও আন্দোলনে এতটুকু ভাটা পরেনি। বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার ধর্মঘটের ডাক দিলেন তাঁরা। আগামী নয় মার্চ ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে।
প্রসঙ্গত, ৩ শতাংশ বাড়তি ডিএ নিয়ে যে কোনওভাবেই সন্তুষ্ট নন কর্মীরা তা আগেই বুঝিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার লাগাতার কর্মবিরোতির ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মচারিদের। পাশাপাশি বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। বর্ধিত ডিএ ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমের বদলে বরং আরও বেড়েছে অসন্তোষ। কেন্দ্রের যেখানে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করে এখন ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে যেখানে রাজ্য সরকারের তিন শতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ৬ শতাংশ ডিএ-এর ঘোষণাকে 'ভিক্ষা দেওয়ার মত' মনে করছে কর্মীরা। রাজ্যের এই ঘোষণাকে প্রত্যাখানও করা হয়েছে।
শুক্রবার থেকেই ৪৮ ঘন্টার কর্মবিরোতির ডাক দিল রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা। পাশাপাশি শুক্রবার বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পাশাপাশি বাম সমর্থিত আরও ৩০টি সরকারি কর্মী এবং পেনশনারদের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকেও ডাক দেওয়া হয়েছে বিধানসভা অভিযানের। ইতিমধ্যেই লাগাতার আন্দোলনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু আন্দোলনকারী। বৃহস্পতিবার আন্দোলন চলাকালীন মাথা ঘুরে পড়ে যান সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনারদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানেও প্রথমে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল রাজ্যজুড়ে কালো ব্যাজ পড়ে ধিক্কার দিবস পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে আন্দোলনের মাঝেই এবার আরও তিন শতাংশ মহার্ঘভাতার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এদিকে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রের ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ-এ। সেখানে মাত্র তিন শতাং ডিএ বৃদ্ধি করে রাজ্য সরকারের ডিএ দাঁড়াল ৬ শতাংশে। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমিত তো হলই না বরং আরও বাড়ল ক্ষোভ। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছে কর্মী সমাজ এই ডিএ 'ভিক্ষা দেওয়ার মতো' বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। এমনকী এই ঘোষণাকে প্রত্যাখান করার কথাও বলেছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে এশিয়ানেট নিজের তরফ থেকে আন্দোলনকারীদের একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা স্পষ্টই জানিয়েছেন আন্দোলন চলবে। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র তফাত এখন ৩৫ শতাংশ। দিনে দিনে বাড়ছে এই তফাত। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে পেন ডাউনের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই আবহে জানুয়ারি থেকে যে ডিএ দেওয়া যেত মার্চ মাসে এসে তা মাত্র তিন শতাং বৃদ্ধি করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সরকারি কর্মীরা। এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন জানিয়েছেন,'আমরা রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানাই। এই ডিএ ভিক্ষার সামিল বলে মনে করি। যতক্ষণ না সম্পূর্ণ ডিএ দেওয়ার ঘোষণা হবে ততক্ষণ আমরা মানছি না।' পাশাপাশি তিনি এও বলেন,'আমরা মনে করি রাজ্য সরকার আন্দোলনে ভয় পেয়েছে। সেই কারণেই এই তিন শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করেছে।'
আরও পড়ুন -
রাজ্যে রোগী পরিষেবা নিশ্চিত করতে বড় পদক্ষেপ, এক ধাক্কায় পাঁচ গুণ বাড়ল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বরাদ্দ
বাংলায় কোনও বনধ হবে না-উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে শিলিগুড়ির সভা থেকে কড়া বার্তা মমতার
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা, কি কি নিয়ম মানতে হবে পরীক্ষার্থীদের, জেনে নিন এক নজরে