রাজ্য সরকারের প্রতি তাঁদের পালটা বার্তা,'সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সৎ মনোভাব দেখান।' রাজ্য সরকারের হুঁশিয়ারির প্রভাব কোনওভাবেই আন্দোলনে পড়বে না বলে সরকারি কর্মীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার রাজধানীতে অবস্থান বিক্ষোভ সরকারি কর্মীদের। তবে আন্দোলনকারীদের এই পদক্ষেপকে মোটেও ভালো ভাবে দেখছে না রাজ্য। ধর্নায় যোগ দিতে যাওয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। তবে সরকারের হুঁশিয়ারির সামনেও আন্দোলনে অনড় সরকারি কর্মীরা। রাজধানীতে দু'দিকের কর্মসূচি পালনের জন্য রবিবারই কলকাতা থেকে রওনা হয়েছিলেন শতাধিক কর্মী। সোমবার প্রায় ৫০০ আন্দোলনকারী জমা হয়েছেন দিল্লির যন্তর-মন্তরে। উল্লেখ্য এর আগেও নবান্নের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ধর্মঘট করেছেন সরকারি কর্মীরা। এবারেও সেই একই ছবি দেখা গেল। বরং রাজ্য সরকারের প্রতি তাঁদের পালটা বার্তা,'সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সৎ মনোভাব দেখান।' রাজ্য সরকারের হুঁশিয়ারির প্রভাব কোনওভাবেই আন্দোলনে পড়বে না বলে সরকারি কর্মীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়, সরকারের চোখ রাঙানিকে ভয় পায় না কর্মী সমাজ ও শিক্ষক সমাজ। আন্দোলনে অনড় থাকার কথাই জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য,'সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সরকার সৎ মনোভাব দেখাক, রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সেটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে।' তাঁরা আরও জানান,'ওঁরা যত ভয় দেখাবে যত চোখ রাঙাবে সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক ততই খারাপ হবে, ফলে রাজ্যটা রসাতলে যাবে।'
প্রসঙ্গত, রাজ্য অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ডিএ-এর দাবিতে দিল্লিতে ধর্না নিয়ে বিরুপ মনোভাব পোষোন করছেন। তাঁর কথায়,'আমি ওঁদের দাবি নিয়ে কিছু বলব না। তবে আদালত ওঁদের সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলেছে। তা না করে ওঁরা দিল্লিতে ধর্নায় বসছে। এর পেছনে কার মদত তা মানুষ দেখতেই পাচ্ছে।' তিনি আরও বলেন,'আদালতের কথা মত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় না বসে যাঁরা দিল্লিতে অবস্থানে বসতে মদত দিচ্ছে তাঁরা বিভ্রান্ত করছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বেতন তো কেন্দ্র দেয় না।'
১০ ও ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দেওয়ার কথা সরকারি কর্মীরা। কমপক্ষে আরও দু'শো কর্মীর ধর্নায় যোগ দেওয়ার কথা। সোম ও মঙ্গলবার শুধু রাজধানীতে ধর্নাই নয় রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মু এবং উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের সঙ্গেও দেখা করবেন তাঁরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নির্মলা সীতারামন ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছেও ডেপুটেশন জমা দেবেন তাঁরা। অন্যদিকে এবারেও ধর্না নিয়ে কড়া মনোভাব নবান্নের। বার বার কর্মবিরোতি ও ধর্নার জেরে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। ফলত আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতি নবান্নের একাংশ। পাশাপাশি রাজধানীতে গিয়ে ধর্না দেওয়ার নেপথ্যে বিরোধীদের ইন্ধনের ইঙ্গিতও দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন -
পুরুলিয়ায় উঠল না রেল অবরোধ, কোটাশিলায় নতুন করে অবরোধ কুড়মি সম্প্রদায়ের