সংক্ষিপ্ত

বার বার কর্মবিরোতি ও ধর্নার জেরে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। ফলত আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতি নবান্নের একাংশ। পাশাপাশি রাজধানীতে গিয়ে ধর্না দেওয়ার নেপথ্যে বিরোধীদের ইন্ধনের ইঙ্গিতও দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

মহার্ঘ ভাতার দাবিতে দিল্লিতে গিয়ে ধর্না কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন সরকারি কর্মীরা। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির জন্য রাজধানীর পথে রওনা হয়েছেন ৩০০-এরও বেশি আন্দোলনকারী। আগামী ১০ ও ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দেওয়ার কথা সরকারি কর্মীরা। কমপক্ষে আরও দু'শো কর্মীর ধর্নায় যোগ দেওয়ার কথা। সোম ও মঙ্গলবার শুধু রাজধানীতে ধর্নাই নয় রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মু এবং উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের সঙ্গেও দেখা করবেন তাঁরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নির্মলা সীতারামন ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছেও ডেপুটেশন জমা দেবেন তাঁরা। অন্যদিকে এবারেও ধর্না নিয়ে কড়া মনোভাব নবান্নের। বার বার কর্মবিরোতি ও ধর্নার জেরে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। ফলত আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতি নবান্নের একাংশ। পাশাপাশি রাজধানীতে গিয়ে ধর্না দেওয়ার নেপথ্যে বিরোধীদের ইন্ধনের ইঙ্গিতও দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ধর্মঘট ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রশাসন। সমস্ত সরকারি কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিক থাকে সেবিষয় হুঁশিয়ারি দিয়েছিল নবান্ন। এই মর্মে অর্থ দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে ধর্মঘটের দিন ছুটি পাবেন না কোনও কর্মী। স্কুল কলেজ-সহ যাবতীয় সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত প্রতিষ্ঠানও শুক্রবার পূর্ণ দিবস খোলা থাকবে বলেও এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল। এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়ে এছিল একমাত্র কোনও কর্মচারী যদি আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন অথবা হসপাতালে ভর্তি থাকেন একমাত্র সে ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।

৩ শতাংশ বাড়তি ডিএ নিয়ে যে কোনওভাবেই সন্তুষ্ট নন কর্মীরা তা আগেই বুঝিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার লাগাতার কর্মবিরোতির ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মচারিদের। পাশাপাশি বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। বর্ধিত ডিএ ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমের বদলে বরং আরও বেড়েছে অসন্তোষ। কেন্দ্রের যেখানে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করে এখন ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে যেখানে রাজ্য সরকারের তিন শতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ৬ শতাংশ ডিএ-এর ঘোষণাকে 'ভিক্ষা দেওয়ার মত' মনে করছে কর্মীরা। রাজ্যের এই ঘোষণাকে প্রত্যাখানও করা হয়েছে।

৪৮ ঘন্টার কর্মবিরোতির ডাক দিল রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা। পাশাপাশি শুক্রবার বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পাশাপাশি বাম সমর্থিত আরও ৩০টি সরকারি কর্মী এবং পেনশনারদের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকেও ডাক দেওয়া হয়েছে বিধানসভা অভিযানের। ইতিমধ্যেই লাগাতার আন্দোলনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু আন্দোলনকারী। বৃহস্পতিবার আন্দোলন চলাকালীন মাথা ঘুরে পড়ে যান সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনারদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানেও প্রথমে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল রাজ্যজুড়ে কালো ব্যাজ পড়ে ধিক্কার দিবস পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।