
Hilsa fish: কালো মেঘে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, পাতে গরম ভাতে ইলিশ ভাজা নয় ভাপা - বাঙালির স্বর্গসুখ বোধহয় একেই বলে। তবে বাঙালি মাছপ্রেমীদের জন্য এবার বর্ষায় দুঃসংবাদ। বিগত বছরগুলির মতো এবছরেও বাজারে অকাল পড়বে ইলিশ মাছের। বিক্রেতা ও মৎসজীবীদের জন্য বড় অর্থনৈতিক সংকটও বটে।
ইতিমধ্যেই বাজারের চেনা মাছ বিক্রেতার কাছে অনেকেই অগ্রিম বলে রাখছেন, "ইলিশ এলে যেন খবর দিয়ো, নিয়ে যাবো"। অথচ মৎসজীবী ও বাজারে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই বলছেন, দাম এমন চড়া হতে পারে যে তা মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। তাবলে বর্ষায় রুপোলি মাছ বাঙালির পাতে উঠবেনা, আশঙ্কায় সকলেই।
মৎসজীবী সংগঠন সূত্রে খবর, জুন মাস থেকে শুরু হয় মাছ ধরার মরশুম। এই বছর মাছ ধরতে সমুদ্রে নামবে মাত্র ৫০ শতাংশ ট্রলার। বাকিরা থাকবে উপকূলেই। কারণ আগের কয়েক বছরে সমুদ্রে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ট্রলার মালিকরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতির জানান, "গত কয়েক বছরে যে হারে ইলিশ মাছ কমছে, তাতে বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে ট্রলার মালিকদের। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে ট্রলার মেরামত করে সমুদ্রে গিয়ে মাছ মেলেনি। সেক্ষেত্রে সবাইকে নামিয়ে লোকসান করার দরকার নেই। যদি ইলিশ মাছই না মেলে, তাহলে গিয়ে কী লাভ? তাই এই বছর মালিকরা আর ঝুঁকি নিতে নারাজ।" আর এতো কম হারে সমুদ্রে ট্রলার নামলে ইলিশ উঠবেও কম, ফলে ইলিশ মাছ বাজারে আসবে অনেকটাই সীমিত পরিমাণে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে দামেও।
অন্য আরেকরকম আশঙ্কার মেঘও ঘনিয়েছে। ইলিশ মাছের একটি বড় অংশ আসে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু এ বছরে ওপার বাংলার সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায়, সংশয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। এই উৎস থেকেও হয়তো পর্যাপ্ত সরবরাহ মিলবে না।
ইলিশ মাছের ঘাটতি আগেই চোখে পড়েছিল। সরকার ও মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে মাছ ধরার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ঠিকই, তবে পরিস্থিতির আশঙ্কায় সেই উদ্যোগ ততটা ফলপ্রসূ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।