Jagadhatri Puja 2023: কুমারী জগদ্ধাত্রীকে স্বপ্নে দেখেছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়, তারপর কীভাবে প্রসারিত হল কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো?

মায়ের ভাসান দেখে মন খারাপ নিয়েই কাঁদতে কাঁদতে নৌকায় ঘুমিয়ে পড়েন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। ঘুমের মধ্যেই মা জগদ্ধাত্রীর স্বপ্নাদেশ পান তিনি।

Sahely Sen | Published : Nov 20, 2023 2:56 AM IST

জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri) মা দুর্গার অপর একটি রূপ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজো হলেও মনে করা হয় এই পুজো শুরু হয়েছিল নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরে। অনেকে আবার মনে করেন এই পুজো শুরু হয় হুগলি জেলার চন্দননগর থেকে। তবে কোথা থেকে এই পুজো শুরু হয় তা নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। চন্দননগরে এই পুজো চারদিন ধরে হলেও কৃষ্ণনগরে এই পুজো এক দিনেই হয়। নবমীর দিন এই পুজো শুরু হয় এবং পরের দিন অর্থাৎ দশমীর দিন জগদ্ধাত্রীর ভাসান হয়।

-

জানা যায়, ১৭৫৪ সালে নবাব আলিবর্দী খানকে রাজকর দিতে না পারায় কারাগারে বন্দি হন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়। পরে কর দিলে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। শোনা যায়, এই সময়টা ছিল দুর্গোৎসবের কাছাকাছি একটা সময়। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পর যখন তিনি ফিরছেন সেই সময় জলঙ্গিতে মা দুর্গার ভাসান চলছে। মায়ের ভাসান দেখে মন খারাপ নিয়েই কাঁদতে কাঁদতে নৌকায় ঘুমিয়ে পড়েন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। ঘুমের মধ্যেই মা জগদ্ধাত্রীর স্বপ্নাদেশ পান তিনি। কুমারী মেয়ে রূপী জগদ্ধাত্রীর স্বপ্নাদেশ পান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। এই জগদ্ধাত্রীর অর্থ হল 'জগৎকে যিনি ধরে রাখেন'। এরপরে পুজো কীভাবে হবে তা জানতে তিনি ছুটে যান তান্ত্রিক কালীশঙ্কর মৈত্র-র কাছে। কালীশঙ্কর মৈত্র তাঁকে বলে দেন কীভাবে পুজো করতে হবে। সেই থেকে শুরু হয় কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রীপুজো, যা এখনও চলে আসছে। পুরনো নিয়ম মেনেই নিষ্ঠার সঙ্গে আজও রাজবাড়িতে এই পুজো হয়ে আসছে। এখানে মা জগদ্ধাত্রী অন্যান্য জগদ্ধাত্রীর থেকে অনেকটাই ছোট কারণ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় স্বপ্নে কুমারী মেয়ে রূপী জগদ্ধাত্রীকে দেখেছিলেন। তাই ঘোড়ক রূপি সিংহ বাহিনী মা জগদ্ধাত্রীর পুজো হয় এখানে। প্রথমে শুধু রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো হলেও এখন কৃষ্ণনগরে ছোট বড় মিশিয়ে শতাধিক পুজো হয়।



চন্দননগরে চারদিন ধরে পুজো হলেও কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো হয় একদিনে। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়। এর ঠিক পরেরদিনই জগদ্ধাত্রীর ভাসান হয়। রাজবাড়ির মা জগদ্ধাত্রী রাজারদিঘিতেই বিসর্জন হয়। তবে কৃষ্ণনগরের অন্যান্য সব ঠাকুর বিসর্জন হয় জলঙ্গি নদীতে। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে রয়েছে এক বিশেষত্ব। এখানে সকালে প্রসেশন করে জলঙ্গী নদীতে হয় মায়ের ঘট ভাসান। ভাসান দেখতে দূর‐দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমান। এদিনই রাত থেকে শুরু হত জগদ্ধাত্রীপুজোর ভাসান। শোনা যায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং রানিমা জগদ্ধাত্রীপুজোর ভাসানের দিন রাজবাড়িতে বসে থাকতেন। ঠাকুর ভাসানে মা জগদ্ধাত্রীকে কাঁধে করে করে নিয়ে যাওয়া হত রাজবাড়ি। সেখানে রাজা এবং রানিমা ঠাকুর দেখে তাঁদের পছন্দের ঠাকুরকে পুরষ্কৃতও করতেন। সেই থেকেই আজও জগদ্ধাত্রী ঠাকুর রাজবাড়ি নিয়ে গিয়ে সেখানে রাখা হয়। তারপর সেখান থেকে ঠাকুর তুলে ভাসানের উদ্দেশে ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।

-
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

Share this article
click me!