
সিদ্দারামাইয়ার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ মে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন সিদ্দারামাইয়া । বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানই এড়িয়ে গেলেন মমতা। নবান্ন সূত্রে খবর সিদ্দারামইয়ার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে যোগ দিতে যাবেন তৃণমূল নেত্রী তথা সাংসদ কাকলি ঘোষদোস্তিদার। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আগামিকাল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেতে পারছেন না। কিন্তু তিনি সিদ্দারামাইয়াকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু কর্ণাটকের অনুষ্ঠানে মমতা পাঠাচ্ছেন কাকলি ঘোষদোস্তিদারকে।
সিদ্দারামাইয়ার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বিরোধী এক্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ কর্ণাটকে কংগ্রেসের বড় জয় বিরোধী ঐক্যের ভিত অনেকটাই মজবুত করবে বলেও অনেকেই মতে করছেন। আগামী বছরই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কংগ্রেস কর্ণাটক জয় করে কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছে। যা বিরোধী জোটের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নীতিশ কুমার যে বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ তৈরি করতে তাও কর্ণাটকের নির্বাচনের জন্য সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। যাইহোক কর্ণাটক নির্বাচনে বিজেপি ভোট না দেওয়ার জন্য সেই রাজ্যের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মমতা। কংগ্রেসের নাম না করেও তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। পাল্টা নবান্নে বসেই বিজেপি বিরোধী জোটের সূত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস কোনও বার্তা দেয়নি। রাজনৈতিক মহলের ধারনা কংগ্রেসকে চাপে রাখতেই মমতা এই কৌশল গ্রহণ করেছেন। এড়িয়ে যাচ্ছেন সিদ্দারামাইয়ার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।
সূত্রের খবর সিদ্দারামাইয়ার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কর্ণাটকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বদের উপস্থিতি থাকবে। কংগ্রেসও এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে জল মাপতে চাইছে। যেখানে তৃণমূল সুপ্রিম মমতার উপস্থিতি অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু সেই মঞ্চই এড়িয়ে গেলেন মমতা। পাল্টা নিজের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠাচ্ছেন কাকলি ঘোষদোস্তিদারকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোট সূত্র অনুযায়ী , কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী সেখানেই তাদের লড়াই করতে হবে। বাকি রাজনৈতিক দলগুলি তাদের সমর্থন জানাবে। কিন্তু এই সমর্থন পাওয়ার জন্য অন্যত্র কংগ্রেসকে বাকি রাজনৈতিক দলগুলিকে সমর্থন করতে হবে। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্তব্যে পরিষ্কার যে আসন ভাগাভাগির এই সূত্র অনুযায়ী আঞ্চলিক দলগুলিকে তারা যে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত সেখানে কংগ্রেসকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। মমতা বলেন , এটা কোনভাবেই হতে পারে না যে তৃণমূল কংগ্রেস কর্ণাটকে কংগ্রেসকে সমর্থন করবে আর বাংলায় কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে। তিনি আরও বলেন, ভাল কিছু পাওয়ার জন্য কংগ্রেসকেও কিছু ত্যাগ করতে হবে। তৃণমূল সুপ্রিম আরও বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের হিসেব অনুযায়ী কংগ্রেস দেশের ২০০ টি আসনে শক্তিশালী। উত্তর প্রদেশের কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে রয়েছে রয়েছে অখিলেশ যাদব। সেখানে কংগ্রেসের অবশ্যই সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করা উচিৎ। তবে কংগ্রেস যে উত্তর প্রদেশের প্রার্থী দেবে না তা তিনি বলছেন না বলেও জানিয়েছেন। তাঁর কথায় সেখানে অশিলেশের সঙ্গে আলোচনা করেই কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে হবে। এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার এই জোট সূত্রের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন এটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু মমতার জোট সূত্র নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো বার্তা দেয়নি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সকলেই ব্যস্ত কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে। তারই মধ্যে মমতাকে আমন্ত্রণ জানান হয়। কিন্তু তা এড়িয়ে গেলেন তৃণমূল নেত্রী।
আরও পড়ুনঃ
'আমাদের দোষ দেওয়া যাবে না', The Kerala Story নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়ে বলল তৃণমূল কংগ্রেস
মমতার জোট সূত্রের তীব্র সমালোচনা বিজেপির, বিরোধীদের মিশন-ভিশন কিছুই নেই
Monsoon: বিলম্বিত লয়ে আসছে বর্ষা, কেরলে মৌসুমী বায়ুর প্রবেশ চার দিন পিছিয়ে - জানাল মৌসম ভবন