
Murshidabad News: কোলে সাতদিনের একরত্তি সন্তান। এখনও আঁতুড় ওঠেনি। কোলে একরত্তি বাচ্চাকে নিয়ে ঘরছাড়া হতে হল মাকে। কবে বাড়ি ফিরতে পারবে পরিবারের সঙ্গে, তা জানে না কেউ। ওই সদ্যোজাতর একমাত্র ভরসাস্থল তখন মায়ের কোলই। যেদিন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, সেই দিন থেকেই এলাকায় অশান্তি শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ।
অনেক স্বপ্ন, আশা নিয়েই বাড়িতে সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন সামশেরগঞ্জের বেদবনা গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু সন্তানের আনন্দ-সুখ বোঝার আগেই ঘরছাড়া হতে হল। সাত দিনের সন্তানকে নিয়ে নদী পেরিয়ে মালদহের বৈষ্ণবনগরের পারলাল হাইস্কুলে ঠাঁই নিয়েছেন ওই গৃহবধূ। কোলে সন্তান, চোখে জল।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে দুষ্কৃতীরা ঘরের মধ্যে ঢুকে তাণ্ডব চালাতে শুরু করে। বাইরে পর পর বোমা পড়ছে। বোমার আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল কোলের সন্তান। দুষ্কৃতীরা শুধু সেখানেই থেমে থাকেনি, বাড়ির ভিতরে ঢুকে গ্যাসের সিলিন্ডার খুলে বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
ঘর জ্বলছে দাউ দাউ করে আর সেই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের ভিতর থেকেই কোনওমতে সাতদিনের সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন গৃহবধূ। তারপর নৌকায় করে নদী পেরিয়ে মালদহে আশ্রয়। মুর্শিদাবাদের শয়ে শয়ে মানুষ, যারা ঘরছাড়া হয়েছেন হিংসায়, তাদের ঠিকানা এখন মালদহের বৈষ্ণবনগরের পারলাল হাইস্কুল। ত্রাণ শিবিরে ঢুকে দেখা গেল, ওই সদ্যোজাত মায়ের কোলে ঘুমাচ্ছে।
গায়ে ধুম জ্বর। কিন্তু ডাক্তার ডাকারও উপায় নেই। একরত্তিকে নিয়ে চিন্তায় দু-চোখের পাতা এক করতে পারছেন না নতুন মা। ওই গৃহবধূ বলেন, "স্বামী বিদেশে কাজ করে। বাড়ি-ঘর সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। গয়না-টাকা সব লুট করে নিয়ে গিয়েছে। দেখা পাওয়া যায়নি পুলিশেরও।" হামলার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, পাশাপাশি পুলিশের নিরাপত্তা রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে ওই গৃহবধূ বলেন, "পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারল কই? তাহলে কি এখানে আসতাম। কিছু পুলিশ এসেছিল, বলছে আমাদের অস্ত্র নিতে। আমরা কী পারব?"। অশান্তি মিটলে নিজের ঠিকানায় ফিরলেও নিরাপদে থাকতে পারবেন কি না, চোখে জল নিয়ে প্রশ্ন জাগছে ওই গৃহবধূর মনে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।