
'মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয়'। স্বামীকে হোয়াটসঅ্যাপে এমন মেসেজ পাঠিয়ে মেয়েকে খুন করে আত্মঘাতী হল মা। খাটের ওপর থেকে ৫ বছরের মেয়ের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। রান্নাঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে মায়ের দেহ। কিন্তু কেন এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। যদিও মৃতার স্বামী দাবি আত্মহত্যা নয়। তাদের মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল না। তাহলে কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে মৃতা - প্রশ্ন তুলেছেন স্বামী। যদিও এদিন কর্মস্থলে ব্যস্ত থাকায় স্ত্রীর মেসেজ দেখেননি বলেও জানিয়েছেন। একাধিকবার স্ত্রীকে ফোন করে না পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর নিতে বলেছেন। তাতেই সামনে আসে জোড়া মৃত্যুর ঘটনা।
মধ্যমগ্রাম দোহারিয়া এলাকায় বসবাসকারী মধুমিতা,তার ৫ বছরের কন্যা সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজেও সেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। মা-মেয়ের রহস্য মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো মধ্যমগ্রামে। মধ্যমগ্রাম দোহারিয়া শৈলেশ নগর দূর্গা মন্ডপ এলাকায় ভাড়া বাড়ি থেকে ওই মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত বছরের দাম্পত্য জীবন মধুমিতা রায়ের। রয়েছে পাঁচ বছরের সন্তান প্রশংসা রায়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্য কোন অশান্তি ছিলো না,তবে কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত! হতবাক প্রতিবেশীরা।উ দ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোটও। কোন রকম কোন ঝগড়া-বিবাদ ছিল না পরিবারে সঙ্গে। মধুমিতার স্বামী প্রসেনজিৎ রায় পিচ-বোর্ড কারখানাতে কাজ করেন। এদিন কর্মস্থল থেকে বিকেলে ওভারটাইমের সময় দুবার ফোনও করেন মধুমিতা কে, কিন্তু ফোন না তোলায় পাশেই মুদিখানার দোকানে ফোন করে খোঁজ নেন তার স্বামী। তখনই অন্যান্য ভাড়াটিয়া সহ প্রতিবেশীরা ঘরে গিয়ে দেখেন মা ও মেয়ের নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এরপর স্থানীয়রাই তাদের দ্রুত উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখার জন্য মধ্যমগ্রাম মাতৃ সদনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মা এবং পাঁচ বছরের মেয়ে মৃতদেহ। সেখান থেকেই আজ মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য বারাসতে পাঠানো হবে। পরিবারের আত্মীয়রা সহ তার স্বামী এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কি কারণে আত্মহত্যা করল তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ঘরে কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর আগে স্বামীকে হোয়াটসঅ্যাপে সুইসাইড নোট লিখে যায় "মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়" জানিয়ে। তবে কাজে থাকায় সেই মেসেজ চোখে পড়েনি, প্রসেনজিতের। তবে কিভাবে মৃত্যু হল তাদের তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। দেহ ময়নাতদন্তের পরই বোঝা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ।পুলিশের প্রাথমিক অনুমান স্বামী-স্ত্রীর মধ্য কোন অশান্তি জেরেই এই ঘটনা,ময়নাতদন্তের পরেও আত্মহত্যার কারণ অনেকটা পরিস্কার হবে বলে মনে করছে পুলিশ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।