এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে একমাত্র কোনও কর্মচারী যদি আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন অথবা হসপাতালে ভর্তি থাকেন একমাত্র সে ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।
বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে শুক্রবার প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। কিন্তু ধর্মঘট ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। ওদিন সমস্ত সরকারি কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিক থাকে সেবিষয় হুঁশিয়ারি দিল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এই মর্মে অর্থ দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে শুক্রবার ছুটি পাবেন না কোনও কর্মী। স্কুল কলেজ-সগ যাবতীয় সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত প্রতিষ্ঠানও শুক্রবার পূর্ণ দিবস খোলা থাকবে বলেও এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে একমাত্র কোনও কর্মচারী যদি আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন অথবা হসপাতালে ভর্তি থাকেন একমাত্র সে ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে খড়গপুরে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে চা-চক্রে যোগ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেই ডিএ-এর ইস্যুতে সরকারি কর্মীদের সমর্থন করে তিনি বলেন,'সরকারি কর্মচারীরা তো আগেই জানিয়েছিল যে তাঁরা ধর্মঘটে যাবেন। প্রন ডাউন করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন তিনি দাবি মানবেন না। সংঘর্ষ বাড়বেই।' প্রসঙ্গত এর আগেও ডিএ আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন দিলীপ। সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, শহীদ মিনারের নীচে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান শুভেন্দু অধিকারী। বিনা শর্তে সরকারি কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলেছিলেন,'রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ তৃণমূল সরকারের বিসর্জন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বঞ্চিত থাকবে।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেছিলেন,'ডিএ-এর দাবিতে বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন করে কোনও লাভ নেই। স্বাস্থ্য দফতরের মতো জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে সমস্ত স্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বলব সব জায়গায় তালা লাগিয়ে রাস্তায় নামুন। বদলির ভয় পেলে চলবে না। সরকারের বিরুদ্ধে বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার বিস্তর ফারাক দিন দিন বেড়েই যাবে।'
প্রসঙ্গত, ৩ শতাংশ বাড়তি ডিএ নিয়ে যে কোনওভাবেই সন্তুষ্ট নন কর্মীরা তা আগেই বুঝিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার লাগাতার কর্মবিরোতির ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মচারিদের। পাশাপাশি বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। বর্ধিত ডিএ ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমের বদলে বরং আরও বেড়েছে অসন্তোষ। কেন্দ্রের যেখানে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করে এখন ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে যেখানে রাজ্য সরকারের তিন শতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ৬ শতাংশ ডিএ-এর ঘোষণাকে 'ভিক্ষা দেওয়ার মত' মনে করছে কর্মীরা। রাজ্যের এই ঘোষণাকে প্রত্যাখানও করা হয়েছে। ৪৮ ঘন্টার কর্মবিরোতির ডাক দিল রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা। পাশাপাশি শুক্রবার বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পাশাপাশি বাম সমর্থিত আরও ৩০টি সরকারি কর্মী এবং পেনশনারদের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকেও ডাক দেওয়া হয়েছে বিধানসভা অভিযানের। ইতিমধ্যেই লাগাতার আন্দোলনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু আন্দোলনকারী। বৃহস্পতিবার আন্দোলন চলাকালীন মাথা ঘুরে পড়ে যান সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনারদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানেও প্রথমে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল রাজ্যজুড়ে কালো ব্যাজ পড়ে ধিক্কার দিবস পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন -
আবার আদানি ইস্যুতে উত্তাল হবে সংসদ, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূল আলোচনা চায়- জানালেন ডেরেক
অনুব্রত-হারা বীরভূমে তৃণমূলের হাল ধরবে কে? কোর কমিটি নিয়ে জোরদার কর্মসূচিতে নামছে শাসক শিবির