বিধানসভা অধিবেষণে সম্পর্ণ অন্যছবি। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের চায়ের আমন্ত্রণে উপস্থিত শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা অধিবেশনের শুভেন্দু বক্তব্যের সময় দলীয় বিধায়কদের ধমক মমতার।
দল বদলের পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। একে অপরকে কখনও নাম করে কখনও আবার নাম না করেই কটাক্ষ করেন। কিন্তু বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে সম্পূর্ণ অন্য ছবি দেখা গেল বঙ্গ বিধানসভায়। শুক্রবার সকালেই বিধানসভায় তাপমাত্রা পারদ যখন উর্ধ্বগামী হওয়ার কথা তখনই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে তা অনেকটাই নিম্নগামী ছিল। সংবিধান দিবস শুক্রবার- তাই নিয়েই বলতে উঠেছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য বা তাঁর ভাষণে বাধা তৈরি করার জন্য শাসকদলের বিধায়করা গোলমাল শুরু করে দেয়। কিন্তু তখনই হাল ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। তিন দলীয় বিধায়কদের রীতিমত ধমক দিয়ে বলেন, 'কেউ বাধা দেবে না। সবাই চুপ করে থাকো।' কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকারর পর আবরও গোলমাল শুরু হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত বিধায়কদের সতর্ক করে দেন। একই ঘটনা ঘটেছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের বক্তব্য় রাখার সময়ও। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সৌজন্যের আরও বাকি রয়েছে।
এদিনই বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল ও মনোজ টিগ্গা। এই প্রথম শুভেন্দু বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গেলেন। দুই নেতার সাক্ষাৎকারের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছিলেন সৌজন্য সাক্ষাৎকার।'শুভেন্দুকে চা খেতে ডেকেছিলাম।' যার অর্থ মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ সাড়া দিয়েই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা।
সম্প্রতি নতুন রাজ্যপাল হিসেবে সিভি আনন্দ বোসের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অনুপস্থিত থাকার দায় তিনি চাপিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর। সম্প্রতি একাধিক ভাষণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার নিশানা করেছেন। যা যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। তারপরেই শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভায় চায়েরর আমন্ত্রণ জানান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও এখনও পর্যন্ত শুভেব্দু অধিকারী এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
যদিও বিজেপির অন্দরের খবর নতুন রাজ্যপাল আসাতে রীতিমত চাঙ্গা গেরুয়া শিবির। নতুন করে শাসকদলের মোকাবিলা করার ছক কষছে শুভেন্দু সুকান্তরা। আগামী বছরই এই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের কাছে অগ্নিপরীক্ষার সামিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক ও বিরোধীরা রীতিমত ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ
লটারিকাণ্ডে অনুব্রত-যোগ তদন্তে বীরভূমে সিবিআই, নোটিশ ধরিয়ে আজই হাজিরার নির্দেশ অস্থায়ী ক্যাম্পে
'বাবা আমার ফেন্ড-ফিলোজফার আর গাইড', 'গল্পকার হতে চাওয়া' ছেলের চোখে সিভি আনন্দ বোস