
North Bengal News: উত্তরবঙ্গের বন্যা বিপর্যস্ত পরিস্থিতির পাঁচ দিন কেটে গেলেও কাটেনি দুর্ভোগ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি ব্লকের হোগলা পাতা গ্রাম। যে গ্রাম আজ কেবলই শ্মশানের রূপ নিয়েছে। যেদিকেই নজর যায় জলঢাকা নদীর বাঁধ ভাঙনের ছবি আর জলের তলায় ভেসে যাওয়া গোটা গ্রামের ধ্বংস স্তুপের ছবি।
প্রশাসন গ্রামকে তিন থেকে চার ভাগে ভাগ করে ত্রাণ শিবির বানিয়ে কোনও ক্রমে রেখেছে। আস্ত একটা গোটা গ্রাম কার্যত প্রশাসনের তরফে বানানো ত্রাণ শিবিরগুলো পর্যাপ্ত নয়। বাধ্য হয়ে প্রায় ১০০ টি পরিবার বেতগরা রেল ব্রিজ সংলগ্ন দুটি রেল লাইনের মাঝে কোনও ক্রমে প্লাস্টিক টাঙিয়ে বসবাস করছে। প্রশাসনের তরফে খাদ্যবস্ত্র পানীয় সমস্ত কিছুই পাচ্ছে। কিন্তু যত দিন বাড়ছে এখন শুধু তাদের চোখেমুখে বাড়ি ফেরার তাগিদ।
ত্রাণ শিবিরে থাকতে চাইছেন না তারা। কিন্তু গ্রামে ফিরবে কিভাবে সেখানে তো থাকার ব্যবস্থা নেই। প্রশাসন বলছে তারা তাদের চেষ্টায় খামতি রাখছে না। এখন দেখার কবে এই ছবিটার পরিবর্তন হবে। আরও সব থেকে ভয়ংকর পরিস্থিতি দিনের বেলাতেই বন্য প্রাণীদের উপদ্রব বাড়ছে। যেখানে সেখানে বেরিয়ে আসছে হাতি গন্ডার বাইসন। কার্যত সেই আতঙ্কেই রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস এখন গ্রামবাসীদের।
অন্যদিকে, সোমবার ফের উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারে তাঁর লক্ষ্য পাহাড়ে বন্যা ও ধস-বিধ্বস্ত এলাকাগুলির পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখা। মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিংয়ে থেকেই বিপর্যয় মোকাবিলার কাজের তদারকি করবেন বলে জানা গিয়েছে। মিরিকের দুর্গতদের জন্যে কলকাতা থেকে ত্রাণসামগ্রীও নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
নবান্ন সূত্রে খবর, দার্জিলিং থেকেই কালিম্পং ও মিরিকের পুনর্গঠন কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সময় যাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন—দমকলকর্মী, এসডিআরএফ সদস্য, পুলিশ, ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক সহ সরকারি কর্মীদের রাজ্যের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে সম্মানিত করবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন—“এই কর্মীরা উত্তরবঙ্গবাসীর জীবন রক্ষায় যেভাবে লড়াই করছেন, তাঁদের জন্য রাজ্য গর্বিত।”
এদিকে ভয়ঙ্কর বৃষ্টিপাতের জেরে ভুটানে ব্যাপক বন্যা পরিস্থিতি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে টানা বৃষ্টিতে ভুটানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ফুন্টসেলিং এলাকায় অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই সংকট মুহূর্তে উদ্ধার অভিযানে নামল ভারতীয় সেনাবাহিনী। দুটি হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে ভুটানের ফুন্টসেলিং অঞ্চলে। আটকে পড়া বহু নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে আরও সাহায্য পাঠানো হবে। তাঁদের মতে, “সংকটের সময়ে ভারত ও ভুটানের পারস্পরিক সহযোগিতা দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে তুলবে।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।