শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ থানা এলাকার একটি খালে ১৭ বছরের তরুণীর লাস পাওয়া গিয়েছিল। যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে তরুণীকে চিনত।
কলিয়াগঞ্জে ১৭ বছর বয়সী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ২০ বছরের তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানিয়েছে কালিয়াগঞ্জের পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতেই শুক্রবার থেকে উত্তাল ছিল কালিয়াগঞ্জ। পুলিশ ও স্থানীয়বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গোটা এলাকা। শনিবারও দফায় দফায় পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সবমিলিয়ে ঘটনার একদিন পরেই উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহম্মদ সানা আখতার জানিয়েছেন, শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ থানা এলাকার একটি খালে ১৭ বছরের তরুণীর লাস পাওয়া গিয়েছিল। যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে তরুণীকে চিনত। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিহত নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা অর্থাৎ পকসো আইনেরও মামলায় দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর , প্রথমিক ময়নাতদন্তে নিহতের শরীরে কোনও রকম আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আখতার জানিয়েছেন, যেখানে দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানেই অর্থাৎ লাশের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিষের বোতল। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখতে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে এই ঘটনার পরই ন্যাশানাল কমিশন ফর ইউমেন বা NCW এই এলাকায় একটি দল পাঠিয়েছে। তারা তিন দিনের মধ্য়ে রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার টুইশন ক্লাসে যাওযার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল নির্যাতিতা। কিন্তু সেদিন বাড়ি ফেরেনি। পরের দিন তার পরিবার ও স্থানীয়রা মেয়েকে খুঁজতে শুরু করে। সেই সময়ই একটি খাল থেকে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের কথায় যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার সঙ্গে তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গেই শুক্রবার রাতের দিকে নির্যাতিতা ছিল।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র থেকে শুক্রবারের উত্তপ্ত হয়ে পড়ে কালিয়াগঞ্জ। শনিবারও দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। কালিয়াগঞ্জের আঁচ পড়তে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি ক্রমগত শাসকদলকে আক্রমণ করছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাজ্য় বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ তিনি কালিয়াগঞ্জে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, তাঁরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করছেন।
অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। রাজ্য পুলিশ তাঁর দেহ অসম্মানজনকভাবে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যেখানে নির্যাতিতার নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে রাজ্য পুলিশ, তেমনই অভিযোগ করেছেন তিনি। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন মৃত্যুর পরেও নির্যাতিতাকে অসম্মান করছে পুলিশ। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারি বলেন, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে বিধায়ককে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বিধায়ককে দীর্ঘক্ষণ থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রেখে দিয়েছিল রাজ্য পুলিশ।